কলকাতা: বিশ্বকাপ জ্বরে ফুটছে ভারত। একদিন আগেই পাকিস্তানকে হারিয়ে আরও যেন রক্ত গরম হয়ে উঠেছে ভারতের ক্রিকেট ভক্তদের। দুনিয়ার একটা বড় অংশ কিন্তু ভারতকে ক্রিকেট ক্রেজি নেশন বলেই জানে। পুজোর সঙ্গেই বিশ্বকাপ তো চলছে। ২০১১ সালের পর এবার যদি আমরা ফের কাপটা জিততে পারি তাহলে তো দারুণ ব্যপার। উত্সবের মরসুমে খুশি আরও খানিকটা বেড়ে যাবে। অর্থনীতিবিদরা আবার বলছেন, যদি না জিততে পারি তাহলেও কিন্তু হতাশ হওয়ার কিছু নেই। দিনের শেষে ভালই হবে দেশের। হিসাব বলছে ভারতের মাটিতে বিশ্বকাপ ক্রিকেট হওয়ায় দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে বড় লাভ হচ্ছে। প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা রোল করবে ভারতীয় অর্থনীতিতে। ভরবে সরকারের কোষাগারে। হিসেবের এই অঙ্কটা কষেছে ব্যাঙ্ক অফ বরোদা।
ব্যাঙ্কের অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন,দুর্গাপুজো, দিওয়ালির উত্সবের মরসুমে ক্রিকেট বিশ্বকাপ হওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাবটা বেশ খানিকটা পড়বে। অন্যদিকে এবারে আবার টিভি-কে পিছনে ফেলে ছুটছে ডিজিটাল মাধ্যমে। লাইভ স্ট্রিমিংয়ে বাড়ছে মানুষের ঝোঁক। এতদিন মানুষ বাড়ি থাকলে টিভিতে খেলা দেখত। কিন্তু কাজে-কর্মে দিনের বড় অংশ বাইরে থাকায় সেই সময়টা খেলা দেখতে পেতেন না। এখন বাইরে থাকলেও মোবাইলে খেলা দেখার সুযোগ এসে গেছে। ফলে টিভি এবং লাইভ স্ট্রিমিং মিলিয়ে স্পনসরশিপ থেকে বেশি আয় করছে ক্রিকেট বোর্ড। এই খাতেই বাজারে প্রায় বারো হাজার কোটি টাকা চলে আসছে বলে খবর। এবার দেশের দশটা শহরে খেলা হচ্ছে। মানুষ মাঠেও যাচ্ছেন। প্লেনে এক শহর থেকে অন্য শহরে গিয়ে অনেকেই খেলা দেখছেন। ফলে ম্যাচ ও ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি, হোটেল বিলের জিএসটি বা রেস্তোরাঁ থেকে কর বাবদ আয় সবই হচ্ছে। সবটা মিলিয়ে সরকারি কোষাগার ভরে উঠছে।
যদিও এখানেও আবার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কেউ কেউ। এক ধাক্কায় যদি অর্থনীতিতে ২০ হাজার কোটি টাকা ঢুকে যায় তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জোগান অতটা বাড়বে তো? চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে তো? উঠছে প্রশ্ন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিমান্ড ও সাপ্লাইয়ের মধ্যে ভারসাম্যের অভাব দেখা দিলে ইনফ্লেশন বা মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। এটা কিন্তু, অর্থনীতির একেবারে গোড়ার কথা। সেই সূত্রেই অর্থনীতিবিদদের কেউ কেউ বলছেন বিশ্বকাপ ক্রিকেট দেশে জিনিসপত্রের দামও কিন্তু বাড়িয়ে দিতে পারে। অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দশমিক দুই পাঁচ শতাংশ পর্যন্ত মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছেন তাঁরা।