
ভারতীয় রেলে এক যুগান্তকারী সময় শুরু হল। কেন বলছি? ১০ ডিসেম্বর, বুধবার রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ঘোষণা করলেন তৈরি হয়ে গিয়েছে ভারতের প্রথম হাইড্রোজেন চালিত ট্রেন সেট। এটি এখন আর কেবল একটি পাইলট প্রজেক্ট নয়। এটি এখন ‘আত্মনির্ভর ভারত’-এর একটা প্রতিচ্ছবি।
আরডিএসও বা রিসার্চ, ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশনের মানদণ্ড মেনে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হয়েছে এই ট্রেন। এটি এই মুহূর্তে ব্রড গেজ লাইনে চলতে সক্ষম বিশ্বের দীর্ঘতম ও সবচেয়ে শক্তিশালী হাইড্রোজেন ট্রেন। যাতে রয়েছে ১০টি কোচ ও এর ক্ষমতা ২৪০০ কিলোওয়াট।
হাইড্রোজেন ট্রেনের সবচেয়ে ভাল বিষয় হল এই ট্রেন পরিবেশ বান্ধব। কারণ হাইড্রোজেন ট্রেনে ডিজেল ট্রেনের মতো কালো ধোঁয়াও বেরোয় না আবার ইলেকট্রিক ট্রেনের ইলেকট্রিক তৈরির জন্য কয়লার উপর একটুও নির্ভর করতে হয় না। হাইড্রোজেন ট্রেনের একমাত্র জল বা জলীয় বাস্প নির্গত করে। কোনও কার্বন এমিশন হয় না এই ট্রেন চললে। এ ছাড়াও এই ট্রেনে ৮টি যাত্রী কোচ থাকছে ও সামনে ও পিছনে মিলিয়ে মোট দুটো ড্রাইভিং পাওয়ার কার থাকছে। যাদের এক একটির ক্ষমতা ১২০০ কিলোওয়াট করে।
এই ট্রেনের প্রয়োজনীয় হাইড্রোজেন কোথা থেকে মিলবে? জানা গিয়েছে হরিয়ানার জিন্দে একটি ডেডিকেটেড গ্রিন হাইড্রোজেন প্ল্যান্ট তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্ল্যান্টে ইলেকট্রোলাইসিস পদ্ধতিতে হাইড্রোজেন তৈরি হবে।
এই ট্রেন তৈরিতে বা এই ট্রেন চললে তার টিকিটেড় মূল্য কত হবে? এই জায়গায় রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, যেহেতু ট্রেনটি এখনও পাইলট পর্যায়ে রয়েছে, ও এই ধরনের পরিকাঠামো দেশে এই প্রথমবার তৈরি হচ্ছে, তাই এখনই সাধারণ ডিজেল বা ইলেকট্রিক ট্রেনের সঙ্গে এর খরচের তুলনা করাটা ঠিক হবে না। কিন্তু, আগামীতে দূষণহীন ও স্বচ্ছ ভারত তৈরিতে ভারতীয় রেলের অঙ্গীকারের কথাই প্রমাণ করে এই উদ্যোগ। নতুন এই ট্রেন আসলে আগামীর প্রযুক্তি নয়, এটি আগামীর ভারতের সওয়ারি।