
ভারতের অ্যাভিয়েশন সেক্টরের জন্য অন্যতম অন্ধকার দিন ছিল ১২ জুন। আমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। মৃত্যু হয় ২৫০-এর বেশি মানুষের। তারপরই একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, হয়তো সমস্ত ড্রিমলাইনার বিমানকে বসিয়ে দেওয়া হতে পারে।
১২ জুনের দুর্ঘটনার ফলে ভারতীয় এভিয়েশন সেক্টর হয়তো সবচেয়ে বড় ইন্সিওরেন্স ক্লেম দেখতে চলেছে। এই বিমার মধ্যে রয়েছে বিমানের দাম, যা ৬৫০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা, প্যাসেঞ্জারদের বিমা, যা প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। এ ছাড়াও রয়েছে আইনি প্রক্রিয়া ও অন্যান্য খরচ, যা প্রায় ২০০ কোটির কাছাকাছি। সব মিলিয়ে এই ঘটনায় বিমা সংস্থাগুলোর খরচ হবে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। উল্লেখ্য, ওয়াদিয়া গ্রুপের বিমান সংস্থা গো ডয়েস ব্যাঙ্কের কাছে এই পরিমাণ ধার ছিল।
এয়ার ইন্ডিয়াকে অধিগ্রহণের পর টাটা গ্রুপ বছরে ২৫০ কোটি টাকা প্রিমিয়াম দিত। আর এই একটা দুর্ঘটনার ফলে বিমা সংস্থাগুলোকে প্রায় ৬ বছরের প্রিমিয়ামের সমান টাকা দিতে হবে এয়ার ইন্ডিয়াকে। এয়ার ইন্ডিয়ার সমস্ত বিমানের বিমার দায়িত্ব ছিল টাটা এআইজি জেনারেল ইন্সিওরেন্স সংস্থা। আর এই বিমায় সাহায্যকারী জিআইসি আরই-এর মতো রিইন্সিওরেন্স সংস্থা ও ইউনাইটেড ইন্ডিয়া, ওরিয়েন্টাল এবং আইসিআইসিআই লম্বার্ডের মতো বিমা সংস্থা।
এই ক্ষেত্রে প্রাইমারি বিমা সংস্থা হিসাবে মোটামুটি ৫ শতাংশ টাকা দিতে হবে ভারতীয় সংস্থাগুলোকে। বাকি ৯৫ শতাংশ টাকা দেওয়ার দায়ভার বিদেশি রিইন্সিওরেন্স সংস্থাগুলোর উপর বর্তাবে। আর এর পর যেটা হতে পারে, বিদেশি রিইন্সিওরেন্স সংস্থাগুলো এশিয়া, বিশেষ করে ভারতকে বড় বড় বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে আরও ঝুঁকিপূর্ণ স্থান হিসাবে বিবেচনা করবে।
এআইজি, এএক্সএ এক্সএল, লয়েড’স অফ লন্ডন বা বারমুডার বিভিন্ন রিইন্সিওরেন্স সংস্থাগুলোর কাছে এবার ভারতের বড় বিমানের বিমা করার জন্য অনেক বেশি প্রিমিয়াম দিতে হতে পারে সংস্থাগুলোকে। আর এর প্রভাব অবশ্যই পড়বে অ্যাভিয়েশন সেক্টরে। আগামীতে বাজারের উপর থেকে এই সংকট হয়তো কেটে যাবে। প্রিমিয়াম হয়তো আবারও আগের মতোই হয়ে যাবে। শুধু ফিরবে না কারও বাবা, কারও মা, কারও স্ত্রী বা কোনও গোটা একটা পরিবারই।