
নয়াদিল্লি: শনিবার বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই বাজেটের দিকেই যে দিনভর তাকিয়ে ছিল গোটা দেশ, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সন্দেহ নেই এই নিয়েও যে বাজেট ঘিরে মানুষের প্রত্যাশাও ছিল তুঙ্গে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছে, দিন শেষে অর্থমন্ত্রীর থেকে অনেক কিছু পেল সাধারণ মানুষ। মিলল আয়করে চূড়ান্ত ছাড়। মিলল জীবনদায়ী ওষুধেও ছাড়। দাম কমল অন্যান্য ওষুধেরও। দাম কমল আরও কত পণ্যের।
তবে শুধুই সাধারণ নয়। এই বাজেটে কিন্তু খুশি আরও একজন। কে সে? সে হল চিন। ভারতের বাজেটে চিনের অন্দরে খুশির আমেজ, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু কেন? কী এমন নিয়ম নীতি আনলেন নির্মলা, যাতে খুশি চিন? আসলে ঠিক চিন নয়। অর্থমন্ত্রীর একটা সিদ্ধান্তে ‘মন খুশি’ একাধিক চিনা সংস্থার।
একদিকে যেমন চিনের দিকে শুল্কের ‘বন্দুক’ দেগেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। কানাডা, মেক্সিকোর মতোই চিনা পণ্যে ১০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে ট্রাম্প। অন্য দিকে, এই শুল্ক কাটছাঁট করে দিয়েছে ভারত। এদিন মোবাইল ফোন তৈরির যন্ত্রাংশে সমস্ত শুল্ক বাদ দিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। আর তাতেই আশার আলো দেখছে অ্যাপেল ও শাওমির মতো সংস্থাগুলি।
এই শুল্ক বাতিলের মধ্যে দিয়ে কিন্তু আখেড়ে লাভ হয়েছে ভারতেরও। কারণ শুধু চিনা সংস্থা নয়, ভারতে মোবাইল ফোনের যন্ত্রাংশ আমদানির বিষয়ে লাভ হবে মার্কিন মোবাইল নির্মাতা সংস্থা অ্যাপেলেরও। সেই হাত ধরে ভারতে বাড়বে বিদেশি ফোনের উৎপাদন। যার জেরে গতি পাবে শিল্প। আয় বাড়বে ভারতের। অন্যদিকে, বাড়তি শুল্কের বোঝা ঘাড় থেকে নেমে যাওয়ায় দেশের অন্দরে আরও উৎপাদন বাড়াতে পারবে চিনা মোবাইল নির্মাণকারী সংস্থাগুলি। সেই সূত্র ধরে বাড়বে তাদের আয়। লাভের গুড় খেয়ে যাবে চিনের সরকারও।
তবে নির্মলার এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক রাজনীতির পিচেও গুরুত্বপূর্ণ বলে তকমা দিচ্ছেন কূটনীতিকরা। একদিকে যখন চিনা পণ্যে পরোধ বাধ টানার চেষ্টা করছে ভারত। সেই মুহূর্তে ভারতের এমন শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির যেমন উপাদেয়। ঠিক তেমন ভাবেই বাণিজ্য মঞ্চকে হাতিয়ার করে চিনের সঙ্গে বরফ গলানোর ক্ষেত্রেও সঠিক সময়।