নয়া দিল্লি: বাড়ি তৈরি বা ফ্ল্য়াট কেনার কথা ভাবছেন? তবে আপনার জন্য বড় সুখবর দিতে পারে সরকার।কয়েকদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অতিরিক্ত ৩ কোটি বাড়ি তৈরির টাকা মঞ্জুর করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় এই তিন কোটি বাড়ির অর্ধেক তৈরি হবে গ্রামে, অর্ধেক শহরে। যাঁরা শহরে প্রথমবার বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার কথা ভাবছেন, এবার তাদের সুখবর দিতে পারে সরকার।
সরকার নতুন প্রকল্প আনতে চলেছে। এই প্রকল্পের দুটো দিক। এক, প্রথমবার বাড়ি কেনার জন্য লোন নিলে বড়সড় ছাড় মিলবে। দুই, সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হোম লোনে মিলতে পারে সুদছাড়। ছাড়ের পরিমাণ হতে পারে সর্বোচ্চ ৯ লাখ টাকা।
ঋণে ছাড় নিয়েও দুটি অপশন দেওয়ার ভাবনা রয়েছে কেন্দ্রের। এক, ভর্তুকির টাকা সরাসরি আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে আসবে বা ডেভেলপারের অ্যাকাউন্টে যাবে। দুই, শুরুতেই গৃহঋণের সুদে ছাড় মিলবে। আপনার যা ভর্তুকি প্রাপ্য সেই অনুসারে আপনার হোম লোনের সুদ নির্ধারিত হবে। কোন অপশনটি আপনি নেবেন, সেটা আপনি নিজেই বেছে নিতে পারবেন।
একটা উদাহরণ দিলে বুঝতে আরও সুবিধা হবে। ধরুন এক ব্যক্তি ২০ বছরের জন্য ৪০ লক্ষ টাকার লোন নিতে চান। সেক্ষেত্রে ১০ শতাংশ হারে ইএমআই হবে ৩৮ হাজার ৬০০ টাকা। নয়া প্রকল্প চালু হলে প্রথম ১০ বছরের জন্য ইএমআই কমে দাঁড়াতে পারে ২৮ হাজার টাকা। কারণ এই সময়টুকুর জন্য ব্যাঙ্ক আপনার থেকে হয়ত ৬ শতাংশ হারে সুদ নেবে। আপনাকে ব্যাঙ্ক যে ভর্তুকি দেবে সেই টাকা ব্যাঙ্কগুলিকে দিয়ে দেবে সরকার। আর আপনি বাজার চলতি হারে ইএমআই দিলে ভর্তুকির টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যেতে পারে। কয়েকটা কিস্তিতে হয়ত সে টাকা মিলবে। তবে প্রকল্পে ঠিক এইরকমই সুবিধা মিলবে, এ কথা কিন্তু হলফ করে বলা সম্ভব নয়।
স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় এমনই এক গৃহঋণ প্রকল্প আনার ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে ভোটের আগে তেমন কোনও প্রকল্পের কথা ঘোষণা হয়নি। অন্তবর্তী বাজেটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জানিয়েছিলেন, শহুরে মধ্যবিত্তদের মাথায় ছাদ দিতে প্রকল্প আনবে কেন্দ্র।
হোম লোনের ক্ষেত্রে আমাদের অনেককেই এক পা এগিয়ে দু-পা পিছোতে হয়। অনেক সময় ইএমআই মিটিয়ে সংসারের খরচ সামলানো যায় না। আবার অনেক সময়ে দেখা যায় অবসরের পরেও হোমলোনের বোঝা চেপে আছে। একটা কথা সবার জেনে রাখা দরকার। গত দু-বছরে কলকাতা ও শহরতলিতে ফ্ল্যাটের দাম কিন্তু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞ সংস্থা নাইট ফ্যাঙ্কের দাবি, গত ২ বছরে শহর কলকাতায় ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে ৪ থেকে ৮ শতাংশ। অনেকে হয়তো এজন্য ফ্ল্যাট কিনবেন ভেবেও পিছিয়ে এসেছেন। কেন্দ্র ভর্তুকি প্রকল্প আনলে এরা হয়ত আবার নতুন করে ফ্ল্যাট কেনার কথা ভাববেন।
তবে চাকরি করেন এমন বহু মানুষেরই কিন্তু স্যালারি স্লিপ নেই। বা থাকলেও ফর্ম ১৬ বা এই ধরনের কোনও নথি নেই। অনেকের কাছে হয়তো আয়কর রিটার্নের নথিও নেই। অথচ তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছেন। বেতন পান। শুধুমাত্র কাগজ নেই বলেই তাঁদের যেন হোম লোন থেকে বঞ্চিত হতে না হয়, সেটা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।