Budget 2024: বাজেট মানেই কঠিন কঠিন শব্দ, কোনটার কী অর্থ জানেন?

Jun 24, 2024 | 9:45 PM

Budget 2024: ২২ জুলাই পূর্ণ বার্ষিক বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। বাজেট বক্তৃতার সময়, মূল্যবৃদ্ধি, রাজস্ব ঘাটতি, মূলধন ব্যয়, রাজস্ব প্রাপ্তি, খারাপ ঋণের মতো বেশ কিছু শব্দ উল্লেখ করা হয়। অনেকের কাছেই এই সকল শব্দ বেশ দুর্বোধ্য। অনেকেই ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না। এই অবস্থায় চলতি বছরের বাজেট পেশের আগে জেনে নেওয়া যাক, বাজেটে ব্যবহৃত কিছু বিশেষ শব্দের অর্থ -

Budget 2024: বাজেট মানেই কঠিন কঠিন শব্দ, কোনটার কী অর্থ জানেন?
প্রতিবারের মতোই এবারও আসন্ন বাজেট নিয়ে প্রত্যাশা রয়েছে সাধারণ মানুষের

Follow Us

নয়া দিল্লি: ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির চাপে ছটফট করছে সাধারণ মানুষ। লোকসভা নির্বাচনেও এই বিষয়টিকে অন্যতম ইস্যুতে পরিণত করেছিল বিরোধীরা। একই সঙ্গে রয়েছে কর্মসংস্থানের অভাব নিয়ে উদ্বেগ। এরই মধ্যে আগামী ২২ জুলাই, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের পূর্ণাঙ্গ বার্ষিক বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এই নিয়ে ষষ্ঠবার বাজেট পেশ করবেন তিনি। নরেন্দ্র মোদী সরকার টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর, এটিই হতে চলেছে প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট। বাজেট বক্তৃতার সময়, মূল্যবৃদ্ধি, রাজস্ব ঘাটতি, মূলধন ব্যয়, রাজস্ব প্রাপ্তি, খারাপ ঋণের মতো বেশ কিছু শব্দ উল্লেখ করা হয়। অনেকের কাছেই এই সকল শব্দ বেশ দুর্বোধ্য। অনেকেই ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না। এই অবস্থায় চলতি বছরের বাজেট পেশের আগে জেনে নেওয়া যাক, বাজেটে ব্যবহৃত কিছু বিশেষ শব্দের অর্থ –

কেন্দ্রীয় বাজেট বা বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি

কেন্দ্রীয় বাজেটকে ভারতের সংবিধানের ১১২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে বার্ষিক আর্থিক বিবৃতিও বলা হয়। এটা হল প্রতি আর্থিক বছরের, অর্থাৎ, ১ এপ্রিল থেকে পরের বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সরকারের আয় ও ব্যয়ের অনুমান। ভারতের কেন্দ্রীয় বাজেট সর্বদাই ১ ফেব্রুয়ারি পেশ করা হয়। লোকসভা নির্বাচনের বছরগুলিতে ১ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করা যায় না। এই বছরগুলিতে, ওই তারিখে অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট পেশ করা হয়। নতুন সরকার গঠনের পর, সংসদে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করতে হয়। এতে পরবর্তী আর্থিক বছরের বাজেটের অনুমানও দেওয়া হয়। বাজেট শব্দটি এসেছে ইংরেজি শব্দ ‘Bowgette’ থেকে। এই শব্দটি আবার এসেছে, ফরাসি শব্দ ‘Bougette’ থেকে।

অর্থনৈতিক সমীক্ষা

অর্থনৈতিক সমীক্ষা হল, বাজেটে অর্থ মন্ত্রকের পেশ করা অন্যতম প্রধান নথি। প্রতি বছর কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করার আগে এই নথি উপস্থাপন করা হয়। অর্থনৈতিক সমীক্ষায় বিগত আর্থিক বছরে, ভারতীয় অর্থনীতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য থাকে। অর্থনৈতিক সমীক্ষায়, অর্থনীতির বর্তমান অবস্থার পাশাপাশি ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গিও থাকে। প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টার নেতৃত্বে, অর্থ মন্ত্রকের একটি দল এই অর্থনৈতিক সমীক্ষা নথি তৈরি করে। নথিটি কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের একদিন আগে, সংসদের দুই কক্ষেই পেশ করা হয়। ১৯৫০-৫১ আর্থিক বছরে প্রথমবার অর্থনৈতিক সমীক্ষা নথি উপস্থাপন করা হয়েছিল।

মূল্যবৃদ্ধি

মূল্যবৃদ্ধির হার সাধারণত শতাংশে প্রকাশ করা হয়। অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক বিভিন্ন কারণে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়লে তাকে মূল্যবৃদ্ধি বলা হয়। কোনও দেশের মুদ্রার ক্রয় ক্ষমতা কমাকে নির্দেশ করে মূল্যবৃদ্ধি। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার পরিবর্তন করে চলেছে আরবিআই।

সেস বা উপকর

সেস বা উপকর হল একটি অতিরিক্ত কর, যা কোনও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে আরোপ করে সরকার। ইতিমধ্যেই যদি কোনও পরিষেবা বা পণ্যের উপর কর ধার্য করা হয়, তার উপর অতিরিক্ত কর হিসেবে সেস সংগ্রহ করা হয়। সরকার সেসের টাকা আলাদা করে রাখে তবে এটা দেশের সমন্বিত তহবিলেরই অংশ। তবে, শুধুমাত্র যে কাজের জন্য এটি সংগ্রহ করা হয়েছে, সেই জায়গাতেই এই তহবিল ব্যয় করা যায়।

রেভিনিউ বাজেট বা রাজস্ব বাজেট

বাজেটের দুটি অংশ রয়েছে। প্রথমটি হল উপার্জন এবং দ্বিতীয়টি ব্যয়। কর ইত্যাদি থেকে সরাসরি আয় করে সরকার। কিছু অর্থ অন্যান্য দেশকে দেওয়া ঋণের সুদ থেকে এবং কিছু অর্থ বিনিয়োগ থেকে আয় করে সরকার। একইভাবে, রাজস্ব আয় থেকে কিছু অর্থ ব্যয় করে সরকার এবং কিছু জিনিসের জন্য অর্থ ধার করে। সরকার তার রাজস্ব আয় থেকে যে করচ করে থাকে, তাকে রাজস্ব বাজেট বা রেভিনিউ বাজেট বলা হয়।

অর্থ বিল

এটি কেন্দ্রীয় বাজেটের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দলিল। বাজেট অধিবেশনে এই বিল উপস্থাপন করা হয়। এতে বাজেটে প্রস্তাবিত কর আরোপ, অপসারণ, মওকুফ, বাতিল বা নিয়ন্ত্রণের বিবরণ দেওয়া হয়।

এক্সাইজ ডিউটি বা আবগারি শুল্ক

আবগারি শুল্ককে আবগারি করও বলা হয়। এটি দেশের অভ্যন্তরে পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয়ের উপর কেন্দ্রীয় সরকারের আরোপিত একটি কর। এটি এক ধরনের পরোক্ষ কর। আবগারি শুল্ককে এখন কেন্দ্রীয় ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্সও বলা হয়। পণ্যের উপর আরোপিত আবগারি শুল্ক সেই পণ্যের উপর আরোপিত অন্যান্য করের সঙ্গে যোগ করে সংগ্রহ করে নির্মাতারা। পরে তারা সরকারের কাছে আবগারি শুল্ক জমা দেয়।

এক্সেস গ্র্যান্ট বা অতিরিক্ত অনুদান

সরকার তার প্রয়োজনীয় খরচ মেটাতে অনুমোদিত অনুদানের চেয়ে যে বেশি অর্থ খরচ করে, তাকে এক্সেস গ্র্যান্ট বা অতিরিক্ত অনুদান বলে। যখন সংসদের অনুমোদিত অনুদানের পরিমাণ, সরকারে প্রয়োজনীয় ব্যয়ের থেকে কম হয়, তখন এক্সেস গ্র্যান্টের একটি আনুমানিক পরিমাণ সংসদের সামনে রাখা হয়। আর্থিক বছর শেষ হওয়ার আগে সংসদে উপস্থাপন করা হয় এই অনুদান।

ডিজইনভেস্টমেন্ট

গত কয়েক বছরে বাজেট বক্তৃতায় এই শব্দটি অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। সরকার যখন সরকারী খাতের কোনও সংস্থা বা সম্পদ বিক্রি করে দেয়, তাকে ডিজইনভেস্টমেন্ট বলে। পাবলিক সেক্টর আন্ডারটেকিংস বা পিএসইউগুলির ঋণের বোঝা যখন বাড়ে থাকে এবং নেতিবাচক হারে রিটার্ন দিতে শুরু করে, সেই সময় প্রদর্শন করে, তখন সরকারের আর্থিক সংস্থানগুলির উপর চাপ তৈরি হয়। সেই সময়ই সরকার ওই অলাভজনক সংস্থাগুলিকে বিক্রির পথে হাঁটে।

Next Article