
আপনি ইএমআইতে ফোন কিনেছেন বা কিনবেন বলে মনে করছেন? তাহলে সাবধান। কারণ, দেশে ঋণের বাজারে ঘনীভূত হয়েছে এক সঙ্কট। আর সেই সঙ্কট মোকাবিলায় যে পথ বেছে নিয়েছে ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলো, তাতে আগামীতে সহজ ঋণ পাওয়ার পথ কিন্তু বন্ধ হয়ে যাবে।
আসলে এই ধরনের ঋণের টাকা শোধ না হওয়ার প্রত্যাশিত হার সাধারণত ২ শতাংশ। আর বর্তমানে এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.৭ শতাংশ থেকে ২.৯ শতাংশের মধ্যে। আর সেই কারণেই সতর্ক হয়ে গিয়েছে সহজে ঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলো। আর একই সঙ্গে বন্ধ হচ্ছে সহজে ঋণ পাওয়ার রাস্তাও।
আসলে দেশের যুব সমাজ এখন সাধারণ স্মার্টফোন ছেড়ে প্রিমিয়াম ফোনের দিকে ঝুঁকছে। কিন্তু সেই সব মানুষদের বেশিরভাগেরই কোনও আর্থিক সক্ষমতা নেই। তা সত্ত্বেও ধার করে দামি ফোন কেনা হয়ে উঠেছে অনেকটা স্টেটাস সিম্বলের মতো। তথ্য বলছে, ভারতে প্রায় প্রতি তিনটি স্মার্টফোনের মধ্যে একটি কেনা হয় সহজ ঋণের মাধ্যমে বা ইএমআইতে। আবার অনেকে একটি ঋণ এড়াতে আর একটি ঋণ নিচ্ছেন। কিন্তু তাঁদের পরিশোধের ক্ষমতা নেই। ফলে, গ্রাহকরা অতিরিক্ত ঋণের ফাঁদে পড়ে যাচ্ছেন।
আগেই, ফিনটেক সংস্থা ও নন-ব্যাঙ্কিং ফাইন্যান্সিয়াল কোম্পানিগুলোর মধ্যে বাড়াবাড়ি রকমের প্রতিযোগিতার কারণে ঋণ নেওয়ার প্রয়োজনীয় ক্রেডিট স্কোরে অনেক শিথিলতা চলে এসেছিল। এমনকি ৫৫০-এর মতো কম ক্রেডিট স্কোর নিয়েও লোন পেয়েছেন অনেকে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ঋণ অনুমোদন প্রক্রিয়া অনেক বেশি কঠিন করে দেওয়া হচ্ছে। আবার অনেক এমন পিন কোড রয়েছে যেখানে এই ঋণ পরিশোধের হার অনেক কম বা ঋণের টাকা শোধ না হওয়ার হার অনেক বেশি সেই সব পিন কোডের এলাকাগুলোয় ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে অনেক সংস্থা। আর সেই কারণেই কনজিউমার ডিউরেবল লোনের গ্রোথ অনেকটা কমে গিয়েছে।
আগামীর পরিস্থিতি নিয়ে এখন থেকেই চাপে রয়েছে ফিনটেক সংস্থা থেকে এনবিএফসিগুলো। আর এমন অবস্থা যাতে আর না হয়, সেই কারণেই আরবিআই এমন একটি প্ল্যাটফর্মের কথা ভাবছে, যা ঋণখেলাপিদের মোবাইল ডিভাইস লক করে দিতে পারবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যদিও বলছে, এই ধরণের বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করে ছোট ও অসুরক্ষিত ঋণের ঝুঁকি কমবে। যদিও এর সঙ্গে গ্রাহক সুরক্ষার বিষয়টাও মাথায় রাখছে তারা।