কল্পবিজ্ঞানের কাহিনি এবার বাস্তবে। সাধারণত কোনও সংস্থার সিইও হিসেবে কোনও রক্ত-মাংসে গড়া মানুষকেই দেখে থাকি। তবে এবার একটি চিনা সংস্থার সিইও হলেন কোনও রক্ত মাংসের মানুষ। সিইও-র চেয়ারে বসেছে এত রোবট। এক রোবটের নির্দেশে চলছে গোটা সংস্থা ও তার কর্মীরা। চিনের এক মেটাভার্স সংস্থা নিজেদের সিইও হিসেবে এক ভার্চুয়াল হিউম্যানয়েড রোবটকে নিয়োগ করেছে। বিশ্ব এই প্রথম এরকম কোনও ঘটনার নজির পাওয়া গিয়েছে।
এই চিনা সংস্থা হল ফুজিয়ান নেটড্রাগন ওয়েবসফ্ট (NetDragon Websoft)। এই সংস্থার আসল কাজ হল মাল্টিপ্লেয়ার অনলাইন গেম ডেভেলপ করা। এর পাশাপাশি বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনও তৈরি করে এই সংস্থাটি। এই রোবট সিইও-র একটি নামও রয়েছে। নাম তাঁর ট্যাং ইউ (Tang Yu)। তিনিই নেটড্রাগন ওয়েবসফ্টের সিইও হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, অন্যান্য আর পাঁচটা সিইও-র মতোই কাজ করবেন ট্যাং ইউ। সংস্থার সাংগঠনিক উন্নয়নের দিকে জোর দেবেন। এবং সেই বিষয়ে নেতৃত্ব দেবেন। গত মাসের শেষের দিকেই এই চিনা সংস্থা নিজেদের সিইও হিসেবে ট্যাং ইউ রোবটের নাম ঘোষণা করে।
সংস্থার তরফে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই রোবট অন্যান্য সিইও-র মতোই কাজ করবে। রিয়েল টাইম ডেটা শেয়ার, যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্ত ও বিভিন্ন বিশ্লেষণমূলক পদক্ষেপ করার মাধ্যমে সংস্থার দৈনন্দিন কাজ পরিচালনা করবেন। সিইও হিসেবে একজন মানুষ যে যে কাজ করে থাকেন তার সবটাই করবেন এই রোবট। এই চিনা সংস্থার চেয়ারম্যান ডঃ দেজিয়ান লিউ বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে, কর্পোরেট ম্যানেজমেন্টের ভবিষ্যত হল AI । ট্যাং ইউ এর নিয়োগের মাধ্যমে আমরা ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে AI-র ব্যবহারকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’ তবে এতে সারা পৃথিবী জুড়ে রোবটেরস গ্রহণযোগ্যতা যদি বেড়ে যায় তাহলে কি চাকরি হারাবে হাজার হাজার মানুষ? এই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই মানুষের মনে উঁকি দিতে শুরু করেছে। এরকম আশঙ্কা করছেন প্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক মহলের অনেকেই। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালেই আলিবাবার চেয়ারম্যান জ্যাক মা এরকম একটি আভাস দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আগামী ৩০ বছরের মধ্যে টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে সেরা সিইও হিসেবে কোনও মানুষের নয় বরং একটি রোবটর ছবি থাকবে।’