
এমন একটা সময় ছিল যখন ক্রেডিট কার্ড ছিল একটা স্টেটাস সিম্বল। কিন্তু বর্তমানে সেই ধারণা প্রায় ভেঙে গিয়েছে। দেশের প্রায় প্রতিটা মানুষের হাতে হাতে এখন ঘুরছে ক্রেডিট কার্ড। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে গাড়ি কেনা বা আইফোন কেনা তো এখন আকছার দেখা যায়। এখন একদিকে যেমন ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার বেড়েছে তেমনই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ইউপিআইয়ের ব্যবহারও।
দেশের ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের শুধু বেশিরভাগটাই ইউপিআই এটা বললে হয়তো কম বলা হবে। ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেমের প্রায় ৮৫ শতাংশই ইউপিআই পেমেন্ট। কিন্তু আগে যাঁরা ক্রেডিট কার্ড স্যোয়াইপ করায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করত, তারাই এখন ইউপিআই পেমেন্টের উপরই বেশি ভরসা করছে। কিন্তু এমনটা কেন?
বড়লোকরাও লক্ষধিক টাকার কেনাকাটা করার জন্য আজকের দিনে ইউপিআই ব্যবহার করে। তার সবচেয়ে বড় কারণ হল ইউপিআই মাধ্যমে লেনদেন খুবই এফিসিয়েন্ট।
ইউপিআই মাধ্যমে পেমেন্ট খুবই দ্রুত করা যায়। ফলে, পেমেন্ট হওয়ার পর গ্রাহকের টাকা বিক্রেতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকতে একেবারে কম সময় লাগে।
আগে ইউপিআই পেমেন্টের মধ্যে দিয়ে দৈনিক ১ লক্ষ টাকা লেনদেন করা যেত। বর্তমানে ইউপিআইয়ের নতুন নিয়ম আসার পর সেই লিমিট অনেকটাই বেড়েছে। আর সেই কারণেই বর্তমানে কোনও দোকানে ৩ লক্ষ বা ৪ লক্ষ টাকার কিছু কিনে ইউপিআই পেমেন্ট করতে চান অনেকেই।
দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে ইউপিআই এখন বিশ্বের একাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে, বিশ্বজুড়ে ইউপিআই পেমেন্ট করা ধীরে ধীরে আরও সুবিধাজনক হয়ে উঠেছে।
ইউপিআইয়ের সঙ্গে এখন অনেক ক্ষেত্রেই রুপে কার্ড ফ্রি দেয়। ফলে, ইউপিআই ও রুপে কার্ড একে অপরের সহযোগী হয়ে উঠেছে। আর অন্য কার্ডের তুলনায় রুপে কার্ডে খরচও কম। ফলে, অনেকেই রুপে কার্ডের দিকে আকৃষ্ট হন।
আগে বড়লোকরা এই কার্ড, ওই কার্ড বা চেকবুক নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন। আমরা এমন জিনিস আগেরকার দিনের সিনেমাতেও দেখতাম। কিন্তু বর্তমানে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাঁরাই আজ ইউপিআই অ্যাডপ্ট করে দিয়েছেন। আর তা ছাড়াও এখন প্রতিটা দোকানে বা বড় শোরুমে ইউপিআই কিউআর কোড ম্যান্ডেটরি হয়ে গিয়েছে। ফলে, অনেকে কার্ডের সুবিধা দিতে না পারলেও ইউপিআই পেমেন্ট অ্যাকসেপ্ট করেন। এ ছাড়াও নতুন প্রজন্মের ফিনটেক স্টার্টআপগুলোও ইউপিআইকে প্রেফার করে। ফলে একটা সময় বড়লোকরা এক্সক্লুসিভ ব্যাপারটিকে পছন্দ করত, তাঁরাই এখন এফিসিয়েন্ট ব্যাপারটা পছন্দ করেন। আর সেই কারণেই ক্রেডিট কার্ড ছেড়ে ইউপিআইয়ের হাত ধরছেন অনেকেই।