নয়া দিল্লি: ভারতে ক্রমে বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। বিশেষ করে কোভিড লকডাউনের সময়, অনেকেই মোটরবাইক বা গাড়ি কেনার দিকে ঝুঁকেছেন। কিন্তু প্রত্যেকেই যে দায়িত্ব নিয়ে রাস্তায় গাড়ি চালাচ্ছেন, তা নয়। সদ্য পুনেতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাই তর প্রমাণ। যেখানে এক ১৭ বছরের কিশোরের বিরুদ্ধে মদ্যপ অবস্থায় একটি পোরশে গাড়ি চালিয়ে, দুই তথ্য প্রযুক্তি কর্মীকে চাপা দিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে, ১ জুন থেকে ড্রাইভিং লাইন্সের নতুন নিয়ম (New Driving License Rules 2024) কার্যকর করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রক। নতুন নিয়মে, গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আঞ্চলিক পরিবহন অফিস বা আরটিও-তে গিয়ে ড্রাইভিং পরীক্ষা দিতে হবে না। আর এই নয়া নিয়মগুলি লঙ্ঘন করলে, ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা দিতে হতে পারে! নয়া বিধি চালুর আগে, এই সম্পর্কে সব কিছু জেনে নেওয়া যাক –
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ড্রাইভিং পরীক্ষা: ১ জুন থেকে, সরকারি আঞ্চলিক পরিবহণ অফিসের পরিবর্তে, বেসরকারি ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেই ড্রাইভিং পরীক্ষা দেওয়া যাবে। লাইসেন্সের যোগ্যতার জন্য পরীক্ষা পরিচালনা এবং সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য সরকারি অনুমোদন দেওয়া হবে এই প্রতিষ্ঠানগুলিকে। এই অনুমোদন পাওয়ার জন্য বেসরকারি ড্রাইভিং স্কুলগুলির জন্য কিছু নতুন নিয়ম জারি করেছে মন্ত্রক –
জমি: ড্রাইভিং স্কুলগুলিতে ন্যূনতম ১ একর জমি থাকতে হবে। চার চাকার গাড়ির প্রশিক্ষণের জন্য ন্যূনতম ২ একর।
পরীক্ষা ব্যবস্থা: স্কুলগুলিকে অবশ্যই উপযুক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
প্রশিক্ষকের যোগ্যতা: প্রশিক্ষকদের অবশ্যই কোনও হাইস্কুলের ডিপ্লোমা বা তার সমতুল্য শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। সেইসঙ্গে, তার কমপক্ষে ৫ বছরের ড্রাইভিং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এছাড়া, বায়োমেট্রিক্স এবং আইটি সিস্টেমের পরিচয় থাকা আবশ্যক।
প্রশিক্ষণের সময়কাল: হালকা মোটরগাড়ির জন্য ৪ সপ্তাহে ২৯ ঘন্টার প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এর মধ্যে ৮ ঘন্টা থাকবে তত্ত্বের জন্য এবং বাকি ২১ ঘণ্টা থাকবে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের জন্য। ভারী মোটরগাড়ির জন্য ৬ সপ্তাহে অন্তত ৩৮ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এর মধ্যে ৮ ঘণ্টা থাকবে তত্ত্বের জন্য, এবং ৩০ ঘণ্টা থাকবে ব্যবহারিক প্রশিক্ষণের জন্য।
পরিবেশে রক্ষায় জোর: নতুন নিয়মগুলির অন্যতম লক্ষ্য হল দূষণ কমানো। এর জন্য, প্রায় ৯ লক্ষ পুরনো সরকারি যানবাহনকে পর্যায়ক্রমে বাতিল করা হবে গাড়ির ধোঁয়া নির্গমনের বিষয়ে কঠোর বিধি প্রয়োগ করা হবে।
কড়া শাস্তি: অনুমোদিত গতির থেকে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানর জন্য ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা জরিমানা করা হবে। তবে, উচ্চ গতিতে গাড়ি চালানর জন্য কোনও নাবালক ধরা পড়লে, তাকে ২৫,০০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। সেই সঙ্গে, গাড়ির মালিকের রেজিস্ট্রেশনও বাতিল করা হবে। ওই নাবালককে ২৫ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে না। লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালাতে গিয়ে ধরা পড়লে, জরিমানা করা হবে ৫০০ টাকা। হেলমেট না পরে মোটরবাইক চালানর জন্য এবং সিট বেল্ট না পরে গাড়ি চালানর জন্য ১০০ টাকা করে জরিমানা করা হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া: মোটের উপর আবেদন প্রক্রিয়া আগের মতোই আছে। বিশেষ পরিবর্তন করা হয়নি।https://parivahan.gov.in-এ গিয়ে অনলাইন বা অফলাইনে আবেদন করা যাবে। তবে, নতুন লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার পদ্ধতি আগের তুলনায় সরল করেছে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রক। আবেদনের মূল্য নির্ভর করছে, কী ধরনের লাইসেন্স চাওয়া হচ্ছে, তার উপর। নথি জমা দিতে এবং ড্রাইভিং দক্ষতার পরিচয় দিতে আরটিও-তে যেতে হবে না।