
দেশের মধ্যবিত্ত চাকরিজীবী মানুষের আশা-ভরসার নাম এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ইপিএফও। কারণ, অবসরের পর এই তহবিল থেকেই পেনশন পান দেশের কোটি কোটি মানুষ। আর এবার সেই ইপিএফওই একটা নতুন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। যাতে আরও অনেক বেশি মানুষ এই স্কিমের আওতায় আসে, সেই চেষ্টাই করছে কেন্দ্র।
এতদিন কোনও ব্যক্তির বেসিক স্যালারি যদি ১৫ হাজার টাকার বেশি হত তাহলে তিনি আবশ্যিক পিএফ বা পেনশন স্কিমের সুবিধা পেতেন না। আর এবার সেই ১৫ হাজারের সীমাই বাড়িয়ে দেওয়া নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছে প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন। এতদিন বেসিক স্যালারির ঊর্ধ্বসীমা ছিল ১৫ হাজার টাকা। আর এবার সেই ঊর্ধ্বসীমা বেড়ে হতে পারে ২৫ হাজার টাকা। শেষবার এই সীমা বাড়ানো হয়েছিল ২০১৪ সালে।
ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সচিব এম নাগরাজু সম্প্রতি মুম্বাইয়ের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন যে, বর্তমান পরিকাঠামোয় ১৫ হাজারের বেশি উপার্জন করা ব্যক্তিদের কোনও পেনশন কভার নেই। তাঁর মনে এটা ‘খুবই খারাপ’ একটা বিষয়। কারণ, বেসিক স্যালারি ১৫ হাজারের সামান্য বেশি হলে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ডে বিনিয়োগ আর বাধ্যতামূলক থাকে না। ফলে, অনেকেই সেই অপশন সিলেক্ট করেন না।
শ্রম মন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন বলছে, এই সীমা ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়ালে এক কোটির বেশি বাধ্যতামূলকভাবে প্রভিডেন্ট ফান্ড ও পেনশন সুরক্ষার আওতায় চলে আসবেন। আপনার বেসিক স্যালারি যদি ১৫ হাজার টাকার বেশি হয় ও ২৫ হাজার টাকার কম হয়, তাহলেই আপনি এই সুবিধা পাবেন।
এই রেঞ্জের মধ্যে আপনার বেসিক স্যালারি হলে আপনি বাধ্যতামূলকভাবে এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড ও এমপ্লয়িজ পেনশন স্কিমের সদস্য হবেন। এর ফলে মাসিক সঞ্চয় নিশ্চিত হবে। এ ছাড়াও ১০ বছর পরিষেবা দেওয়ার পর আপনি আজীবন পেনশন পাওয়ার সুবিধা পাবেন। নতুন সীমায় আপনার পেনশনের জন্য জমা টাকার পরিমাণ বাড়বে।
এই মুহূর্তে ৭ কোটি ৬০ লক্ষ সক্রিয় সদস্য নিয়ে ইপিএফও প্রায় লক্ষ কোটি টাকার তহবিল পরিচালনা করে। এই পরিবর্তন ভারতের সামাজিক নিরাপত্তা জালকে আরও শক্তিশালী করার দিকে একটি বিরাট পদক্ষেপ। ইপিএফওর ট্রাস্টি বোর্ডের আগামী বৈঠকে এই প্রস্তাবটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আসতে পারে। এটি প্রস্তাব পাশ হলে তা মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত কর্মীদের ভবিষ্যতের নিরাপত্তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে।