
ভারতে কোনও বিদেশি সংস্থা বিমার ব্যবসা করতে গেলে এতদিন তারা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারত না। আইন অনুযায়ী যে কোনও ভারতীয় বিমা সংস্থায় সর্বোচ্চ ৭৪ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারত বিমা সংস্থাগুলো। আর এবার বদল ঘটতে চলেছে সেই নিয়মেই। বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি বিনিয়োগ বা FDI-এর ঊর্ধ্বসীমা ৭৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে সরাসরি ১০০ শতাংশ করার বিল পাস করল কেন্দ্র। অর্থাৎ, এখন থেকে কোনও ভারতীয় অংশীদার ছাড়াই বিদেশের বড় সংস্থাগুলো বিমা পরিষেবা পৌঁছে দিতে পারবে আপনার কাছে।
এই বদল নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের যুক্তি খুব স্পষ্ট। বেশি পুঁজি মানেই উন্নত প্রযুক্তি এবং আরও ভাল বিমা। আগে বিদেশি সংস্থাগুলির জন্য ভারতীয় পার্টনার খোঁজা ছিল এক হিমালয়ের মতো কঠিন কাজ। এবার সেই রাস্তা সাফ। পাশাপাশি বিদেশি রি-ইনসুরেন্স শাখাগুলোর জন্য মূলধনের অঙ্ক ৫ হাজার কোটি থেকে কমিয়ে হাজার কোটি করা হয়েছে।
২০১৪-১৫ সালে দেশে বিমা সংস্থা ছিল ৫৩টি। যা এখন বেড়ে গিয়ে ঠেকেছে ৭৪-এ। প্রিমিয়াম সংগ্রহের পরিমাণ ৪ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি থেকে লাফিয়ে পৌঁছেছে ১১ লক্ষ ৯৩ হাজার কোটি টাকায়।
সহজ কথায়, প্রতিযোগিতা বাড়লে লাভ আপনারই। বিমা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে পরিষেবা আরও স্বচ্ছ হবে এবং নতুন কর্মসংস্থানও তৈরি হবে। তবে নজরদারিও কড়া হচ্ছে। কোনও সংস্থা ভুল তথ্য দিলে এখন তাদের ১ কোটির বদলে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানা করতে পারবে বিমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা IRDAI বা ইন্সিওরেন্স রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া।
দেশের জাতীয় বিমা সংস্থা এলআইসিকেও দেওয়া হয়েছে বাড়তি স্বায়ত্তশাসন। সাধারণ মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিতে ইতিমধ্যেই ১৭ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা ঢেলেছে সরকার। বিমা এখন আর কেবল সঞ্চয় নয়, সাধারণ মানুষের রক্ষাকবচ হয়ে ওঠার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।