
সোনার জন্য ২০২৫ সাল আক্ষরিক অর্থেই এক ‘সোনার বছর’। ২৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম আউন্স প্রতি ৪,৫৫০.১০ ডলার বা প্রতি ১০ গ্রামে ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ১৭৭ টাকায় পৌঁছে সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ভারতের বাজারেও ছবিটা একই। এমসিএক্স বা মাল্টি কমোডিটি এক্সচেঞ্জে গত এক বছরে সোনার দাম প্রায় ৭৫ শতাংশ বেড়ে বছর শেষে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার টাকার কিছু বেশিতে। কিন্তু প্রশ্ন হল, ২০২৬ সালেও কি সোনার এই ঔজ্জ্বল্য বজায় থাকবে?
বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পিছনে মূলত পাঁচটি কারণ কাজ করছে। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত, মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কা ও বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা। ভিটি মার্কেটসের বিশেষজ্ঞ রস ম্যাক্সওয়েল মনে করেন, ২০২৬ সালে সোনার দাম ঠিক কতটা হবে, তা নির্ভর করবে বিশ্ব অর্থনীতি কতটা স্থিতিশীল থাকে তার উপর। তাঁর মতে, আগামী বছর দাম আউন্স প্রতি ৩,৯০০ থেকে ৫,৫০০ ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রতি ১০ গ্রামে দাম ১ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করবে।
আপনি কি ভাবছেন ২০২৬-এ সোনা কিনবেন না রুপো? অগমন্ট-এর রিসার্চ হেড রেনিশা চেনানি বলছেন, সোনা হল দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষার কবচ। অন্যদিকে, রুপো কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও শিল্পক্ষেত্রে চাহিদার কারণে এই মুহূর্তে অনেকটা বেশি রিটার্ন দিতে পারে। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীর জন্য সোনার ওপর ভরসা রাখাটাই বেশি নিরাপদ।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হল, সোনাকে স্রেফ লাভের গুড় হিসেবে না দেখে নিজের পোর্টফোলিও-র সুরক্ষা হিসেবে দেখুন। একবারে সব টাকা না ঢেলে ধাপে ধাপে অনেকটা এসআইপির মতো করে বিনিয়োগ করুন। ২০২৬ সালে বিশ্ব অর্থনীতির মোড় যেদিকেই ঘুরুক, আপনার জমানো সোনা কিন্তু শেষমেশ আপনার ঢাল হয়েই দাঁড়াবে।