
সাধ্যের বাইরে গিয়ে খরচ নয়, সামান্য খরচ করেও আকাশে কর্তৃত্ব রক্ষা, আকাশে প্রহরাই লক্ষ্য আজকের এই নতুন ভারতের। আর সেই কারণেই দেশ হ্যাল বা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেডের তেজস যুদ্ধবিমানে এতটা ভরসা রাখছে। কিন্তু সেটা ঠিক কীভাবে?
রাফাল ভারতে তাদের বিমানের খোল তৈরি করার জন্য পদক্ষেপ করলেও, সেই বিমানের দাম যে খুব একটা কম হবে, এমন নয়। অঙ্কের বিচারে দেখলে দেশে তোইরি ১টি রাফালের দাম হবে ২১০ মিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে, একটি তেজস মার্ক ২ যুদ্ধবিমানের দাম৭০ থেকে ৮০ মিলিয়ন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, ১টি রাফালের জায়গায় কেনা যাবে অন্তত ৩টি তেজস যুদ্ধবিমান।
যুদ্ধবিমানের সংখ্যা বাড়লে স্কোয়াড্রনের সংখ্যাও বাড়বে এক ধাক্কায়। এখানে অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন, দামে কম হলেই কি সেই বিমান নিতে হবে? তাহলে তো অন্য কোনও বিমান এমন কম দামে কিনতেই পারত ভারত। কিন্তু এখানেই রয়েছে এক দারুণ চমক। তেজসে ব্যবহার করা হয়েছে দেশীয় Uttam AESA রাডার, যা ৯১২টি ট্রান্সমিট/রিসিভ মডিউল বা TRM এবং গ্যালিয়াম নাইট্রাইড বা GaN প্রযুক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরি। আর এই প্রযুক্তি ফরাসি রাফালের তুলনায় অন্তত ৭ বছর আগিয়ে রয়েছে। অর্থাৎ, এই প্রযুক্তিগত উন্নতি করতে রাফালের অন্তত ৭ বছর লাগবে।
এ ছাড়াও সম্প্রতি ইজরায়েল রাফালে ইন্টিগ্রেট করার জন্য তাদের ‘মেঘনাদ’ মিসাইল দেওয়ার প্রস্তাবও পেশ করেছে। আর তেমন হলে তেজস কিন্তু কম খরচে দারুণ ক্ষমতাশালী একটা যুদ্ধবিমান হয়ে উঠবে। আর যে বাজেট প্রতিরক্ষা মন্ত্রক রাফালের জন্য বরাদ্দ করতে পারে বলে খবর, সেই বাজেটে রাফালে ৬টি স্কোয়াড্রনের বদলে তেজসের ১৩-১৪টি স্কোয়াড্রন হয়ে যাবে।
তবে, এই মুহূর্তে তেজসের প্রয়োজনীয়তা অন্য জায়গায়। সদ্য দেশের বায়ুসেনা থেকে অবসর নিয়েছে ‘উড়ন্ত কফিন’ নামে পরিচিত মিগ ২১ বাইসন। ফলে ফাঁকা হয়েছে অনেক স্কোয়্যাড্রন। আর সেই জায়গা পূরণেই এবার দ্রুত তেজসের উপর নির্ভর করতে চাইছে বায়ুসেনা। জানা যাচ্ছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই তেজস উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে ডানা মেলবে। আর সেই সঙ্গে এই বিমান দেশের সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক সাশ্রয়— দুইয়ের সমন্বয়েই বিশ্বকে বার্তা দিচ্ছে।