
ভারতে তৈরি ফাইটার জেট তেজসের আকাশে ওড়ার স্বপ্ন এবার সত্যি হওয়ার পথে। অবশেষে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হিন্দুস্থান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড বা হ্যাল আমেরিকার সংস্থা জেনারেল ইলেকট্রিক বা জিইর সঙ্গে তেজসের জন্য প্রয়োজনীয় জেট ইঞ্জিনের চুক্তি সম্পন্ন করল। একদিকে যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে, তখন ভারতের এই চুক্তি দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে একটা অন্যরকম বার্তাও দিচ্ছে।
৯৭টি লাইট কমব্যাট এয়ারক্র্যাফট তেজস মার্ক ১এ যুদ্ধবিমানের জন্য এই ইঞ্জিনগুলি ব্যবহার করা হবে। প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮,৮৭০ কোটি টাকার বিনিময়ে ১১৩টি এফ৪০৪ ইঞ্জিন কিনতে চলেছে হ্যাল।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য ৬২ হাজার ৩৭০ কোটি টাকায় ৯৭টি তেজস বিমানের অর্ডার দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। আর এই বিমানগুলোতেই ব্যবহার করা হবে এই ১১৩টি ইঞ্জিন।
বিতর্কের মধ্যেও কেন এই চুক্তি? আসলে বাণিজ্য নীতি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হলেও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ভারত সেই মতবিরোধ গায়ে মাখছে না। কারণ, জাতীয় নিরাপত্তা সবার আগে। আর এই ক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল, যে তেজসের ডিজাইন এমন ভাবেই করা হয়েছে যে এই বিমানে খুব সহজে অন্য কোনও ইঞ্জিন লাগানো যাবে না। আর এটা শুধু তেজস নয়, যে কোনও যুদ্ধবিমানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যদিও এর আগের ৮৩টি তেজস মার্ক ১এ যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন সরবরাহের ক্ষেত্রে অনেকটা দেরি করেছিল জেনারেল ইলেকট্রিক। আর সেই কারণেই এই বিমানের ডেলিভারি সময়মতো শুরু করা যায়নি।
হ্যাল সূত্রে খবর, এই ইঞ্জিনগুলির সরবরাহ শুরু হবে ২০২৭ সাল থেকে। আর সেই সরবরাহ চলবে ২০৩২ সাল পর্যন্ত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, এই চুক্তি ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগকে গতি দেবে এবং ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধ ক্ষমতাকে অনেকটা বাড়িয়ে তুলবে। আর এই মুহূর্তে ভারতীয় বায়ুসেনার প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে ও সদ্য অবসরপ্রাপ্ত মিগ ২১ বাইসনের বদলি হিসাবে একমাত্র ভরসার নাম হল তেজস মার্ক ১এ।