
আগে মানুষ ভাবত ৬০ বছর বয়স হলেই অবসর নিতে হবে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের চিন্তার মধ্যে আসে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পাওয়ার বিষয়টা। অর্থাৎ, যে সময়ের পর টাকা উপায়ের জন্য কোনও ইঁদুরদৌড়ে নাম লেখাতে হবে না। কিন্তু ৪৫ বছর বয়সের মধ্যে মানুষের এই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসা জরুরি। এর পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে।
কিন্তু ৪৫ কেন? কারণ, ৪৫ হল মানুষের জীবনের এমন একটা বয়স যে বয়সের পর মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তন আসে। সেই সময় মানুষের চাহিদার ধরণ পালটে যায়। মানুষ সেই সময় দাঁড়িয়ে একটু শান্তি খোঁজে। কিন্তু এর সঙ্গে অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কী যোগ রয়েছে?
প্রথমত, মানুষের বয়স ৪০ পেরোলেই কর্মক্ষেত্রে তার ফ্লেক্সিবিলিটি কমতে থাকে। ধীরে ধীরে কমতে থাকে চাপ নেওয়ার ক্ষমতাও। ফলে অভিজ্ঞতা থাকলেও এই কারণগুলোর কারণে অনেক সময়ই এমপ্লয়ার সংস্থার কোপে পড়েন চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিরাই। আর সেই কারণে প্রত্যেক মানুষের জীবনে ৪৫ বছরের মধ্যেই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা আসা জরুরি। এ ছাড়াও ৪৫ বছর এমন একটা সময় যে সময় বেশিরভাগ মানুষের কাঁধে তার স্ত্রী, সন্তান, বৃদ্ধ পিতা-মাতার দায়িত্বও থাকে।
দ্বিতীয়ত, ৪৫-এর পর মানুষের জীবনে একাধিক সমস্যা আসতে পারে। আসতে পারে মিড লাইফ ক্রাইসিও। কিন্তু এই ক্রাইসিস যেন অর্থকে কোনও সমস্যায় যাতে ফেলতে না পারে, সেদিকে নজর রাখা জরুরি। আর সেই কারণেই এই সময়ের মধ্যে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা খুবই জরুরি। এ ছাড়াও ৪৫ পেরোলে মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসাবে দেখা দেয় স্বাস্থ্য। আর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য স্বাস্থ্য বিমা থেকে একাধিক পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, সবই করতে হয়। ফলে, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এই বয়সে খুবই জরুরি।
তৃতীয়ত, মানুষের জীবনে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস কী জানেন? সেটা হল সময়। আর আমরা এই সময়ের কদর করি না। কিন্তু ৪৫-এর পর মানুষের বয়স যতই বাড়বে, মানুষ তার জীবনের অনেক আশা-আকাঙ্খাকে জলাঞ্জলি দিতে থাকবে। আর সেটা যদি করতে না চান, তাহলে অবশ্যই ৪৫ বছর বয়সের মধ্যে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করুন। ধরা যাক, আপনার চাকরি করতে ভাল লাগে না। ফলে, আপনি অর্থনৈতিক ভাবে স্বাধীন হয়ে নিজের মতো একটা পাহাড়ে একটা হোমস্টে কিনলেন আর সেখানে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিলেন। আর এমন একটা জীবনযাত্রার জন্যই দরকার অর্থনৈতিক স্বাধীনতা।
চতুর্থত, সময় যত যাচ্ছে, খরচ বাড়ছে জীবন যাত্রায়। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে যদি কাউকে ঋণ নিতে হয়, তাহলে কোনও দিনই সে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাধীন হতে পারবে না। আর তার জীবনের শেষদিন পর্যন্ত টাকা নিয়ে চিন্তা থাকবে। আর আমরা তো জানি, টাকা নিয়ে চিন্তা জীবনের শান্তি নষ্ট করে।