Household Debt: দক্ষিণ ভারতে বেশি, বাংলায় ঋণের বোঝা কম! বাঙালিরা আসলে এগিয়ে নাকি পিছিয়ে?

Household Debt is Lower in Bengal: আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের ঋণের হার ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ, দেশের জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ মানুষের মাথায় রয়েছে ঋণের বোঝা। আর এই জায়গায় দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলো এগিয়ে রয়েছে কয়েক যোজন।

Household Debt: দক্ষিণ ভারতে বেশি, বাংলায় ঋণের বোঝা কম! বাঙালিরা আসলে এগিয়ে নাকি পিছিয়ে?
Image Credit source: Getty Images

Oct 24, 2025 | 4:43 PM

দক্ষিণ ভারত, দেশের বাকি অংশের তুলনায় বেশ অনেকটা উন্নত। হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, চেন্নাইয়ের মতো শহর রয়েছে দাক্ষিণাত্যে। আর এবার দেশের স্ট্যাটিসটিক্স মন্ত্রকের একটি তথ্য জানা গেল আরও এক নতুন সত্য। যদিও এই সত্যের ২টি দিন রয়েছে। একটি দিক যেমন আলোকজ্জ্বল তেমনি অপর দিকটিও নিকষ অন্ধকারের মতো।

দেশের স্ট্যাটিসটিক্স মন্ত্রকের ষান্মাষিক জার্নাল ‘সর্বেক্ষণ’-এর একটি রিপোর্ট বলছে দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলির মানুষের উপর ঋণের বোঝা নাকি বাকি দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি আসলে দক্ষিণের আর্থিক সমৃদ্ধি এবং ক্রেডিট অ্যাক্সেসের একটি প্রতিচ্ছবি।

আজকের দিনে, মানুষ দুই ধরনের সমস্যায় পড়ে সাধারণত ঋণ নেয়। ধরুন, কোনও ব্যক্তি খুব ভাল একটি চাকরি করেন। তিনি একটি বাড়ি তৈরি, ফ্ল্যাট কেনা বা গাড়ি কেনার জন্য ঋণ নিলেন। সেটি যেমন একটা ভাল দিক, তেমনই কোনও ব্যক্তি যদি ঋণ বা ক্রেডিট কার্ডের জালে জড়িয়ে যান সেই ক্ষেত্রে ঋণের হাত থেকে বাঁচার জন্য তিনি আরও ঋণ নিয়ে থাকেন। এটা হল এই ধরনের ঋণের খারাপ দিক।

আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের ঋণের হার ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ, দেশের জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ মানুষের মাথায় রয়েছে ঋণের বোঝা। আর এই জায়গায় দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলো এগিয়ে রয়েছে কয়েক যোজন। অন্ধ্রপ্রদেশের প্রতি ৫ জন মানুষের মধ্যে ২ জনের বেশি মানুষই ঋণগ্রস্ত। অর্থাৎ, ৪৩.৭ শতাংশ মানুষের মাথায় রয়েছে ঋণের বোঝা। এরপরই রয়েছে তেলঙ্গানা। সেই রাজ্যের ৩৭.২ শতাংশ মানুষকেই প্রতি মাসে গুণতে হয় ইএমআই। এ ছাড়াও কেরলে ২৯.৯ শতাংশ ও তামিলনাড়ুতে ২৯.৪ শতাংশ মানুষই ঋণগ্রস্ত। আসলে, এই বিপুল ঋণই যেন ওই সব রাজ্যের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতার সঙ্কেত। অর্থাৎ, তাঁদের ক্ষমতা রয়েছে, তাই তাঁরা ঋণ নিয়েছেন।

অন্যদিকে, এই তালিকায় আমাদের সাধের বাংলা কোথায়? পরিসংখ্যান বলছে, কম ঋণের তালিকায় একেবারে নিচের দিকে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এই রাজ্যের জনসংখ্যার মাত্র ৮.৫ শতাংশ মানুষের মাথায় রয়েছে ঋণের বোঝা। আর সবচেয়ে কম ঋণ রয়েছে ৩.৪ শতাংশ।

ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চের অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর পারস জসরই বলছেন, ‘দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে মাথাপিছু আয় বেশি। তাদের ক্রেডিট-টু-ডিপোজিট অনুপাতও দেশের বাকি অংশের চেয়ে অনেক বেশি’। আর সেই কারণেই ঋণদাতারাও সেখানে নিশ্চিন্তে ঋণ দিতে সাহস পান। ফলে, এই ঋণের তথ্য আসলে দেশের দক্ষিণ অংশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সূচক।

বাংলা কেন এত পিছিয়ে?

পরিসংখ্যান বলছে, আমাদের রাজ্যে ঋণের হার কম। কিন্তু এর পিছনে কারণ কী? এই রাজ্যে কি ক্রেডিট-টু-ডিপোজিট কম নাকি রাজ্যের মানুষের মাথাপিছু আয় কম বলেই এমন অবস্থা? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই রাজ্যের মানুষের মাথাপিছু আয় দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলোর তুলনায় কিছুটা কম হলেও সেই কারণে এই রাজ্যের মানুষের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ কম, এমনটা নয়। ঐতিহাসিক ভাবে বাঙালি অর্থনৈতিক ভাবে বিত্তশালী হওয়ার তুলনায় সাংস্কৃতিক ভাবে বিত্তশালী হওয়াকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। তবে এটাও ঠিক যে, ঋণ না নেওয়া কিন্তু রাজ্যের উন্নয়নের দিক দিয়েও একটা প্রশ্ন তুলে দেয়। এই সবের পরও এই প্রশ্ন থেকেই যায় যে, বাংলা কি ঋণের ব্যাপারে সাবধানী নাকি পিছিয়ে?