
নয়া দিল্লি: আজকের দিনে অধিকাংশ লেনদেনই অনলাইনে করতে অভ্যস্ত, তবে বড় লেনদেনের ক্ষেত্রে অনেকেই এখনও নগদ টাকায় ভরসা করেন। অনেকে আবার কাজ বা ব্য়বসার কাজের সুবিধার জন্য বাড়িতে বেশ মোটা অঙ্কের নগদ টাকা রাখেন। তবে জানেন কি, নির্দিষ্ট একটা অঙ্কের বেশি টাকা রাখলে আয়কর দফতর আপনার বাড়িতে হানা দিতে পারে, এমনকী মোটা অঙ্কের জরিমানা করতে পারে। কত সেই টাকার অঙ্ক জানেন? আয়কর আইনই বা কী বলছে নগদ টাকা রাখা নিয়ে?
ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার-চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট সার্থক আহুজা আয়কর আইন সহজে ব্যাখ্যা করেছেন। যদি আপনার বাড়ি থেকে আয়কর দফতর টাকা উদ্ধার বা বাজেয়াপ্ত করে এবং আপনি সেই টাকার উৎস বা বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিতে না পারেন, তাহলে উদ্ধার হওয়া টাকার অঙ্কের উপরে ৮৪ শতাংশ পর্যন্ত কর ও জরিমানা বসতে পারে। এর মধ্যে সারচার্জ, সেস ও নানা পেনাল্টি থাকে। অর্থাৎ ধরুন আপনার বাড়ি থেকে ১০ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে, যার উৎস আপনি বলতে পারছেন না, তাহলে ৮.৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কর ও জরিমানা করতে পারে আয়কর বিভাগ।
এবার প্রশ্ন হল, আয়কর বিভাগ বুঝবে কী করে যে কারোর বাড়িতে বিপুল পরিমাণে টাকা রাখা আছে?
আয়কর বিভাগের আধিকারিকরা কোনও অন্তর্যামী নন, ব্যাঙ্ক ও ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম থেকে যাবতীয় লেনদেনের তথ্য ক্রমাগত আয়কর বিভাগের কাছে পাঠানো হয়।
যেমন, কেউ যদি এক বছরে তার সেভিং অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ লক্ষ টাকার বেশি অর্থ তোলেন, তাহলে ব্যাঙ্ক সেই তথ্য সঙ্গে সঙ্গে আয়কর বিভাগকে জানায়। যদি কেউ ২০ লক্ষ টাকার বেশি অর্থ ব্যাঙ্ক থেকে তোলেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে টিডিএস কেটে নেওয়া হয়।
এছাড়া যদি কোনও লেনদেন সন্দেহজনক বলে মনে হয়, তাহলেও আয়কর বিভাগ তদন্ত এবং হানা দিতে পারে। তাই বাড়িতে নগদ রাখলে, তার যথাযথ প্রমাণও রাখা জরুরি, কারণ প্রতিটি ক্যাশ লেনদেনেরই রেকর্ড থাকে সিস্টেমে।
যদি কেউ সম্পত্তি স্থানান্তরিত বা বিক্রির সময় নগদে লেনদেন করেন, তাহলেও কিন্তু জরিমানার মুখে পড়তে পারেন। কোনও প্রপার্টি বা সম্পত্তি বিক্রির সময় ২০ হাজার টাকার বেশি নগদে লেনদেন হলেই ১০০ শতাংশ জরিমানা হতে পারে। অর্থাৎ যত টাকার নগদ লেনদেন করবেন, তত টাকাই জরিমানা দিতে হবে।
একইভাবে ২ লক্ষ টাকার বেশি নগদ নিলেও, ১০০ শতাংশ জরিমানা হবে।
অনেকেই বিপদে বন্ধু বা আত্মীয়ের কাছ থেকে নগদ অর্থ ধার নেন। সেই টাকার অঙ্কও যদি বেশি হয়, তাহলে আয়কর বিভাগ ১০০ শতাংশ জরিমানা করতে পারে।