বেঙ্গালুরু: বাড়ি তৈরি করতে গেলে সিমেন্ট, লোহার রডের সঙ্গে যে উপাদানটি অপরিহার্য, তা হল বালি। কিন্তু, পৃথিবীর অনেক প্রাকৃতিক সম্পদের মতোই বালিও ইতিমধ্যেই দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। ফল, বিশ্ব জুড়ে বিজ্ঞানীরা বালির বিকল্প নির্মাণ সামগ্রী খুঁজছেন। আর এরই মধ্যে কামাল করলেন বেঙ্গালুরুর ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স’ বা আইআইএসসি-র (IISC) বিজ্ঞানীরা। তাঁরা এমন এক অনন্য উপাদান তৈরি করেছেন, যা নির্মাণকাজে প্রাকৃতিক বালির প্রয়োজন দূর করতে পারে।
আইআইএসসি-র ‘সেন্টার ফর সাসটেইনেবল টেকনোলজিস’ (CST)-এর গবেষকরা খনন করা মাটি এবং নির্মাণ বর্জ্যে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফ্লু গ্যাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড সঞ্চয় করার উপায় খুঁজছেন। এই উপাদানই প্রাকৃতিক বালিকে প্রতিস্থাপন করতে ব্যবহার করা যাবে। আইআইএসসি-র গবেষণা দলটি বলেছে, “নির্মাণ সামগ্রীর ফলে পরিবেশের যে ক্ষতি হয়, এতে সেই ক্ষতি অনেকাংশে কমবে। শুধু তাই নয়, কার্বন ডাই অক্সাইড সঞ্চয় করলে নির্মাণ বর্জ্যে এমন এক বৈশিষ্ট্য তৈরি হবে, যা নির্মাণকাজে এই বর্জ্যের ব্যবহার বাড়াতে পারে।”
এই গবেষণা দলের নেতৃত্বে ছিলেন সিএসটি-র সহকারী অধ্যাপক সৌরদীপ গুপ্ত। তাঁর গবেষণা দল দেখিয়েছে, প্রাকৃতিক বালির বদলে ‘কার্বন ডাই অক্সাইড ট্রিটেড’ নির্মাণ বর্জ্য নির্মাণকাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় নির্মাণ সামগ্রীর শক্তি ২০ থেকে ২২ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণের জন্য, ভারত সরকার কার্বন নির্গমন কমানোর যে লক্ষ্য নিয়েছে, এই পদ্ধতি সেই উদ্যোগেরও সহায়ক।
গবেষকরা, নির্মাণস্থলে খননের ফলে যে এঁটেল মাটি উঠে আসে, তাতে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস ইনজেকশনের প্রভাবও পরীক্ষা করেছে। তাঁরা দেখেছেন, এর ফলে সিমেন্ট এবং চুনের উপস্থিতিতে কাদামাটি আরও বেশি স্থিতিশীলতা পায়। কাদামাটির পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল, ছিদ্রের পরিমাণ এবং তাতে চুনের প্রতিক্রিয়াও অনেকটা কমে যায়। এর ফলে, নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে উপাদানটির কর্মক্ষমতা বাড়ে।