নয়া দিল্লি : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির আকাশ স্পর্শ করার স্বপ্ন এবার হয়ত পূরণ হতে আর বেশি সময় লাগবে না। আজ আইএমএফের তরফে গ্লোবাল ইকোনমিক আউটলুক প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ২০২২ সালে সবথেকে দ্রুত আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ভারতের। আইএমএফের তরফে যে হিসেব দেখানো হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে আগামী বছরে ভারতের অর্থনীতি ৮.৫ শতাংশ হারে বাড়তে পারে।
করোনা অতিমারির কারণে ভারতীয় অর্থনীতি হোচট খেয়ে পড়েছিল। প্রায় ৭.৩ শতাংশ হারে সংকুচিত হয়েছিল দেশীয় অর্থনীতি। কিন্তু এবার ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারত। আইএমএফ মনে করছে, চলতি আর্থিক বছরে ৯.৫ শতাংশ হারে আর্থিক শ্রীবৃদ্ধি হতে পারে ভারতের। একইসঙ্গে আগামী বছরও ৮.৫ শতাংশ হারে বাড়তে পারে ভারতের জিডিপি।
গোটা বিশ্বের নিরীখে দেখতে গেলে ২০২১ আর্থিক বছরে ৫.৯ শতাংশ হারে বাড়তে পারে বিশ্ব অর্থনীতি এবং ২০২২ সালে তা ৪.৯ শতাংশ হারে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিশ্ব অর্থনীতির।
প্রথম সারির যে দেশগুলি অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেক বেশি শক্তিধর, তাদের তুলনায় অনেকটাই বেশি হারে বাড়বে ভারতের জিডিপি। আইএমএফের হিসেব বলছে, আগামী বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক বৃদ্ধির হার হতে পারে ৫.২ শতাংশ, ব্রিটেনের ক্ষেত্রে তা ৫ শতাংশ এবং চিনের ক্ষেত্রে তা ৫.৬ শতাংশ হতে পারে। আর সেখানে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি হতে পারে ৮.৫ শতাংশ হারে। আর এমনটা হলে, বিশ্বের সবথেকে দ্রুত হারে আর্থিক বৃদ্ধি হবে ভারতেই।
আইএমএফের তরফে ভারতের উপভোক্তা মূল্য সূচক (Consumer Price Index) ভিত্তিক মুদ্রাস্ফীতির হারও গত আর্থিক বছরের তুলনায় কমতে পারে। গতবছর এই হার ছিল ৬.২ শতাংশ। সেখান থেকে চলতি বছরে উপভোক্তা মূল্য সূচক কমে ৫.৬ শতাংশে নেমে আসতে পারে। পরবর্তী আর্থিক বছরের জন্য, এটি আরও কমতে পারে বলে মনে করছে আইএমএফ। আগামী বছরে উপভোক্তা মূল্য সূচক কমে ৪.৯ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। যা আইএমএফের পূর্বের অনুমানের (৬.৩ শতাংশ) চেয়ে ১.৪ শতাংশ পয়েন্ট কম।
উল্লেখ্য, এর আগে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের মনেটারি পলিসি কমিটি (MPC) এবং স্ট্যান্ডার্স অ্য়ান্ড পোরস (S&P) তাদের রিপোর্টে ২০২২ আর্থিক বছরের জন্য ভারতের আর্থিক শ্রীবৃদ্ধির হার ৯.৫ শতাংশ হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল।
এদিকে, ভারতকে ৫ লাখ কোটি ডলারের অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছে মোদী সরকার। আর এই স্বপ্ন পূরণ করতে হলে আগামী পাঁচ বছরে ভারতে অন্ততপক্ষে মোট ৭.৮ লাখ কোটি ডলারের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ দরকার। সম্প্রতি ডেলয়েটের এক রিপোর্টে এমনটাই উল্লেখ রয়েছে।
এই ৭.৮ লাখ কোটির এফডিআই লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করতে হলে ভারতে এখনও কমপক্ষে ৪০ হাজার কোটি ডলার নতুন বিদেশি বিনিয়োগ টানতে হবে। সম্প্রতি যে রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ২০২১ আর্থিক বছরে ৮ হাজার কোটি ডলার বিদেশি বিনিয়োগ এলেও তার মাত্র ৩ শতাংশই গ্রস ক্যাপিটাল হিসেবে বেরিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুন : ৫ লাখ কোটি ডলারের অর্থনীতি! কত কোটি বিদেশি বিনিয়োগ এলেই হবে নমোর স্বপ্নপূরণ?