
১২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকার বেশি উপার্জনে আমাদের দেশে দিতে হয় আয়কর বা ইনকাম ট্যাক্স। কিন্তু ভারতের মানচিত্রেই এমন এক রাজ্য রয়েছে যেখানে উপার্জনের উপর দিতে হয় না কোনও ইনকাম ট্যাক্স। কী, শুনতে অবাক লাগছে নাকি? কিন্তু এই বিষয় একেবারে সত্যি। আয়কর আইনের সেকশন ১০ (২৬এএএ)-এর অধীনে এই বিশেষ ছাড় দিয়ে থাকে আয়কর দফতর।
শুনতে অবাক লাগলেও কিন্তু এটাই সত্যি। ১৯৭৫ সালের ২৬ এপ্রিল ভারতে অন্তর্ভুক্ত হয় সিকিম। আর সেই সময় থেকেই এই বিশেষ সাংবিধানিক রক্ষাকবচ পেয়ে আসছে হিমালয়ের কোলের এই ছোট্ট রাজ্যটি। আপনি যদি সিকিমে বসবাস করেন, তাহলেই কি এই কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন?
আয়কর আইন অনুযায়ী, এই সুবিধা কিন্তু সকলের জন্য নয়। বিশেষ কিছু মানুষই এই ছাড় পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু কাঁরা? প্রথমত, যাঁরা ১৯৭৫ সালের ২৬ এপ্রিলের আগে থেকে সিকিমের বাসিন্দা হিসেবে নথিবদ্ধ। দ্বিতীয়ত, যাঁদের কাছে ‘সিকিম সাবজেক্ট সার্টিফিকেট’ রয়েছে। ও সেই ব্যক্তিদের পরবর্তী প্রজন্ম।
মনে রাখবেন, ১৯৭৫ সালের পর যাঁরা ভারতের অন্যান্য প্রান্ত থেকে গিয়ে সিকিমে স্থায়ী হয়েছেন, তাঁরা কিন্তু এই নিয়মের আওতায় পড়েন না। শুধুমাত্র সেখানে গিয়ে থাকতে শুরু করলেই আপনি এই কর ছাড়ের সুবিধা পাবেন না।
সিকিমের মধ্যে কেউ যদি কোনও ব্যবসা করেন, অথবা চাকরি করেন বা সিকিম থেকে আসা ডিভিডেন্ড ও সিকিউরিটিজের সুদ পান, তাঁদের কোন আয়কর দিতে হয় না। তবে ওই ব্যক্তি যদি সিকিমের বাইরে কোনও জায়গা থেকে কোনও উপার্জন করেন, তবে তাঁকে সাধারণ ভারতীয় নাগরিকের মতোই ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন জমা দিতে হবে।
সিকিমের যাঁরা ভূমিপুত্র, তাঁদের সংবিধানের এই বিশেষ অধিকার একটা অর্থনৈতিক সুরক্ষা দেয়। তবে সিকিমে বিনিয়োগের পরিকল্পনা বা সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের পরিকল্পনা করার আগে এই বিষয়ে সূক্ষ্ম আইনি পার্থক্যটুকু বুঝে নেওয়া জরুরি।