নয়া দিল্লি: প্রযুক্তি শিল্প সংস্থা, ন্যাসকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জেন এআই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে গোটা বিশ্বর মধ্যে, বর্তমানে ভারত রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে ভারতে ২৪০টিরও বেশি জেনারেটিভ এআই (Gen AI) স্টার্টআপ তৈরি হয়েছে। ২০২৩-এ ভারতে মাত্র ৬৬টি জেন এআই স্টার্টআপ ছিল। অর্থাৎ, গত বছরের তুলনায় ভারতে এই ধরনের স্টার্টআপের সংখ্যা ২৬০ শতাংশ বা ৩.৬ গুণ বেড়েছে। ভারতে এই বছর ১৭টি নেটিভ জেন এআই ভাষার মডেল লঞ্চ হয়েছে। জেন এআই পরিষেবায় ৪.৬ গুণ বৃদ্ধি হয়েছে। চলতি বছরে নতুন যে স্টার্টআপগুলি চালু হয়েছে, তার প্রায় ৮০ শতাংশই জেন এআই অ্যাসিস্ট্য়ান্স অফার করে। এই সকলের মিলিত ফল হিসেবেই ভারতে এআই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের এই উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে।
এই স্টার্টআপগুলি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তবে, গত এক বছরের মধ্য়েই এই স্টার্টআপগুলি সম্মিলিতভাবে ৭৫ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছে। রিপোর্ট অনুসারে, এই স্টার্টআপগুলির প্রায় ৭৫ শতাংশ, ইতিমধ্যেই লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। কোডিং অ্যাসিস্ট্যান্স এবং ওয়ার্কফ্লো অগমেন্টেশন টুলের মতো উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে যে স্টার্টআপগুলি, তাদের তহবিল দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০২৩-এ এই ধরনের স্টার্টআপগুলির সংখ্যা ছিল ২০টি, এই বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫টিতে। জেন এআই অ্যাসিস্ট্যান্স প্রদানকারী স্টার্টআপগুলির সংখ্যা গত বছরের তুলনায় চারগুণ বেড়েছে। এখন ভারতে এই ধরনের স্টার্টআপের সংখ্যা ১৩০।
ন্যআসকমের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তথা চিফ স্ট্র্যাটেজি অফিসার, সঙ্গীতা গুপ্তা বলেছেন, “গত ১২ মাসে, ভারতের জেনারেটিভ এআই ল্যান্ডস্কেপ যুগান্তকারী রূপান্তর ঘটেছে। উদ্ভাবনী পণ্যের একটি তরঙ্গ দেখা দিয়েছে, যা শিল্পর মানকে নতুন করে লিখছে। সেই সঙ্গে এলএলএম এবং ডেটা চালিত পরিষেবার মতো নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি করেছে। অনুকূল বাস্তুতন্ত্রে দ্রুত উদ্ভাবনের বিষয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকলেই এই অগ্রগতি অর্জন সম্ভব। আমাদের অবশ্যই উচ্চ-সম্ভাবনা সম্পন্ন জেন এআই স্টার্টআপগুলির জন্য তহবিল সংগ্রহকে অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং শীর্ষ-স্তরের এআই প্রতিভাদের বিকাশের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। শক্তিশালী দায়বদ্ধ এআই ফ্রেমওয়ার্ক বাস্তবায়নের মাধ্যমে AI সিস্টেমে আস্থা তৈরি করা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সহযোগিতার মাধ্যমে, আমরা জেনএআই এর পূর্ণ সম্ভাবনাকে মুক্তি দিতে পারি এবং এই প্রযুক্তিগত বিপ্লবে ভারতকে বিশ্বনেতা করে তুলতে পারি।”
ন্যাসকমের প্রতিবেদনে ভারতে এআই ইকোসিস্টেমের বৃদ্ধির পথে কী কী বাধা রয়েছে, তাও তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পেটেন্ট ক্যাপিটালের অভাব, সীমিত কম্পিউট ক্ষমতা, যার জন্য এন্টারপ্রাইজগুলি বড় হতে পারছে না, গ্রাহকের দ্বিধা এবং দক্ষ এআই প্রতিভার অভাব। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৩-এর তুলনায় এআই সম্পর্কে উপভোক্তাদের উদ্বেগ কমলেও, আস্থা নেই বলে এখনও তারা এআই ব্যবহারের বিষয়ে অনেক সংযমী। ইকোসিস্টেমের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে, ন্যাসকমের পরামর্শ, স্টার্টআপগুলিকে অনবরত পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হবে। শিল্প অংশীদারদের সঙ্গে মিলে উদ্ভাবন করে যেতে হবে এবং প্রাথমিক অবস্থাতেই ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে অংশীদারি স্থাপন করতে হবে।