
ক্যালিফোর্নিয়া: অর্থের থেকেও মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ। ভাল পদের চাকরি, বেতনও মোটা অঙ্কের। তবু চাকরি ছাড়তে দ্বিধা করেননি রাহুল। ভারতীয় বংশোদ্ভূত (Indian origin) যুবক রাহুল পাণ্ডে বিগত ৫ বছর ধরে ফেসবুক তথা মেটা (Meta)-য় সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। বার্ষিক সাড়ে ৬ কোটি টাকা বেতন ছিল তাঁর। কিন্তু, তিনি উপলব্ধি করেছিলেন, কেবল ভাল পজিশন ও মোটা অঙ্কের বেতনটাই জীবনের সব নয়, মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই মেটা-র সাড়ে ৫ বছরের চাকরি ছেড়ে দিয়ে নিজের ব্যবসা টারো শুরু করেন রাহুল।
কেবল সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার নন, ম্যানেজার হিসাবে ক্যালিফোর্নিয়ায় ফেসবুকে বিশেষ পদে আসীন ছিলেন রাহুল পাণ্ডে। মেটা-র চাকরি ছাড়ার পর লিংকডিন-এ একটি পোস্ট করেন রাহুল। সেই পোস্টে তিনি লিখেছেন, “ফেসবুকে কাজে যোগ দেওয়ার পর প্রথম ৬ মাস আমি খুবই উদ্বিগ্ন ছিলাম। সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে ইম্পোস্টার সিন্ড্রোমে ভুগতাম। কোম্পানির সংস্কৃতি এবং কাজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে লড়াই করেছি। কিন্তু, এই ধরনের প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে দক্ষতা অর্জনের চাপ মানসিক সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলেছিল।”
ফেসবুকে যোগ দেওয়ার পর থেকে অস্তিত্বের সংকটে ভুগছিলেন বলেও জানান রাহুল পাণ্ডে। তিনি জানান, ফেসবুকের কাজে যোগ দেওয়ার দু-বছর পর তিনি নিজেকে এক শীর্ষ পদে আসীন করতে সমর্থ হন। তাঁর বেতন বৃদ্ধিও হয়। কিন্তু, তাঁর মানসিক শান্তি ছিল না। করোনা মহামারী বিশ্বকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। রাহুলও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। তারপর তিনি বুঝতে পারেন, এর বাইরেও অনেক কিছু শেখা যায়। তাই ২০২১ সাল শেষ হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে তিনি মেটা ছাড়িয়ে বিশ্বের মধ্যে নিজের জায়গা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। অবশেষে গত বছরের জানুয়ারিতে মেটা-র চাকরি ছেড়ে দেন রাহুল। তারপর নিজের ব্যবসা ট্যারো শুরু করেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।
মানসিক আনন্দ ও নিজেকে খুঁজে পেতেই মেটা-র চাকরি ছেড়েছেন বলে লিংকডিন পোস্টে উল্লেখ করেছেন রাহুল। পোস্টের শেষে তিনি লিখেছেন, “আমি দেশের প্রথমসারির উপার্জনকারীদের মধ্যে ছিলাম। কিন্তু, সেই স্তরে অর্থ আসলে প্রাপ্য মনে হয় না, ভাগ্য একটি বিশাল ভূমিকা পালন করে।”