
গোটা বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ ভাবে বাড়ছে রিলের জনপ্রয়তা। আর এই তাৎক্ষণিক একটা আনন্দের জন্য অনেকে একাধিক গোপনীয় বিষয় ভিডিয়ো হয়ে যাচ্ছে বা কোনও বিপজ্জনক বিষয়ে স্টান্ট করছে অনেকে। আর সেই সব থেকে রেলে চাকরিরতদের সাবধান করল ভারতীয় রেল। স্পষ্ট ভাষায় জারি হল এক নির্দেশিকা। এখন থেকে ডিউটিরত কোনও রেলকর্মী ভিডিয়ো ব্লগিং, রিল তৈরি বা ভিডিইয়ো শ্যুট করতে পারবেন না। নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা বজায় রাখতেই এই কড়া সিদ্ধান্ত, জানা গিয়েছে রেলের তরফে।
সম্প্রতি বহু রেল স্টেশনের ভিডিয়ো ও কর্মরত রেল কর্মীদের ভিডিয়ো বা ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রে একাধিক সংবেদনশীল এলাকার ছবি ও ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। রেলওয়ে এটিকে গুরুতর অপরাধ বলে মনে করছে। তাদের মতে, এর ফলে দেশজুড়ে রেলের সুরক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ফাঁস হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। তাই দেশজুড়ে এই ধরনের কার্যকলাপ বন্ধের জন্য কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রেলের পক্ষ থেকে দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী, এই নিয়ম যে বা যাঁরা ভঙ্গ করবে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি চলে যেতে পারে চাকরিও।
ভিডিয়ো বানানোর এই নিষেধাজ্ঞা দেশের প্রায় সমস্ত রেল প্রেমাইসেসে কার্যকর হবে। স্টেশন, ওয়ার্কশপ, ইয়ার্ড, অফিস, কন্ট্রোল রুম, এমনকি ট্রেনের ভেতরেও কোনও প্রকার কনটেন্ট তৈরি করা যাবে না।
সংবেদনশীল এলাকায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা: ট্রেন পরিচালনা, নিরাপত্তা পদ্ধতি ও স্পর্শকাতর এলাকার ভিডিয়ো আপলোড করায় অনেক ক্ষেত্রেই রেলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছিল। চাকরি করতে গেলে যে নিয়ম নীতি মেনে চলতে হয়, রেলওয়ে এটিকে সেই নিয়মের গুরুতর লঙ্ঘন বলে মনে করে বলে জানিয়েছে।
মোবাইল ব্যবহারে কড়াকড়ি: মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু কড়াকড়িও নিয়ে আসতে চলেছে ভারতীয় রেল। বলা হয়েছে, কর্মীরা শুধুমাত্র বিরতির সময় ব্যক্তিগত প্রয়োজনে মোবাইল ব্যবহার করতে পারবেন। ডিউটির সময় ভিডিয়ো করা, ছবি তোলা বা সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু আপলোড করা একেবারে নিষিদ্ধ। সরকারি ফোন বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে কেউ যদি ব্যক্তিগত কনটেন্ট বানায়, সেটাও গুরুতর অপরাধ বলে গণ্য হবে।
কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে রায়পুর ডিভিশনে ঘটা একাধিক ঘটনা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে জোনে ইতিমধ্যেই এই নিয়ম চালু করে দিয়েছে। অন্যান্য ডিভিশনও দ্রুত এই একই নিয়ম অনুসরন করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই নির্দেশ অমান্য করলে সাসপেনশন, চার্জশিট, বেতন কেটে নেওয়া বা আরও কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভ্লগিং এর বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নয়, বরং রেলের নিরাপত্তা, ট্রেন অপারেশন ও একাধিক বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষার জন্য এই নিয়ম হয়ত অপরিহার্য।