
ভারতীয় রেলওয়েকে শুধুমাত্র দেশের লাইফলাইন বললে ভুল বলা হবে। গোটা বিশ্বের সামনে এটা ভারতের এগিয়ে চলার প্রতীক স্বরূপ। কিন্তু কীভাবে? আসলে সাম্প্রতিক তথ্য ও পরিসংখ্যান বলছে ভারতের ব্রডগেজ রেল নেটওয়ার্কের ৯৯.২ শতাংশ ক্ষেত্রই বৈদ্যুতিকরণ হয়ে গিয়েছে।
গতি বা সময়ানুবর্তীতার কথা নয়। কিন্তু বৈদ্যুতিকরণের দিক দিয়ে ভারতীয় রেলওয়ে এখন বিশ্বের তাবড় তাবড় শক্তিকে টক্কর দিয়েছে। কারণ, আমাদের দেশের যেখানে ৯৯ শতাংশের বেশি রেলওয়ে ট্র্যাকে ইলেকট্রিক ট্রেন চলে যেখানে চিনের সংখ্যাটা মাত্র ৮২ শতাংশ। ব্রিটেনের মতো প্রথম বিশ্বের দেশেও বৈদ্যুতিক রেল নেটওয়ার্ক মাত্র ৩৯ শতাংশ। অর্থাৎ, এই ক্ষেত্রে প্রযুক্তির দৌড়ে পশ্চিমী দেশগুলোকেও পিছনে ফেলছে ভারত।
২০১৪ থেকে ২০২৫, এই ১১ বছরে ভারতের ৪৬ হাজার ৯০০ কিলোমিটার লাইন বৈদ্যুতিকরণ হয়েছে। ২০১৪ সালের আগের ৬০ বছরে যতটা বৈদ্যুতিকরণ হয়েছিলও, গত ১১ বছরে হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি। বর্তমানে দেশের ১৪টি রেল জোনে ও দেশের ২৫টি রাজ্যে রেল নেটওয়ার্কের বৈদ্যুতিকরণ হয়ে গিয়েছে।
এই ২৫টি রাজ্যের মধ্যে রয়েছে আমাদের পশ্চিমবঙ্গও। এ ছাড়াও উত্তর পূর্ব ভারতের মিজোরাম বা অরুণাচলও কিন্তু পিছিয়ে নেই। বাকি রয়েছে কেবল আসামের কিছুটা অংশ। পরিবেশবিদরা বলেন, ট্রেনে দূষণের পরিমাণ সড়কপথের দূষণের তুলনায় অনেক কম হয়। এ ছাড়াও একই দূরত্ব ট্রেনে যেতে প্রতি যাত্রী পিছু যা জ্বালানি খরচ হয়, সেটা গাড়ির তুলনায় অনেক কম। ফলে, কমে জ্বালানির খরচও।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব লোকসভায় জানিয়েছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতীয় রেলকে ‘নেট জিরো’ কার্বন নির্গমনকারী সংস্থায় পরিণত করাই কেন্দ্রের লক্ষ্য। ট্রেনের ডিজেল ইঞ্জিনের ধোঁয়া থেকে একদিকে যখন মুক্তি পাচ্ছে ভারত, অন্যদিকে সেই সুফল পাবে আমার-আপনার মতো সাধারণ মানুষই।
ভারতীয় রেলের সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক যদি বৈদ্যুতিকরণ হয়ে যায় তাহলে তা বিশ্বের বৃহত্তম গ্রিন রেল নেটওয়ার্কের তকমা পাবে। তবে, এর মধ্যেও ট্রেনের ভাড়া যদি সাধারণ মানুষের সাধ্যের মধ্যে থাকে, তবেই কিন্তু আসল সার্থকতা!