বিনিয়োগের জন্য কেন সেরা হয়ে উঠছে এই খাত?

Investment Tips: কোভিড-১৯-পরবর্তী প্রাথমিক বুল রানের সময় থেকেই প্রতিরক্ষা স্টকগুলি দুর্দান্ত লাভ করেছে। তবে, সাম্প্রতিকতম পরিস্থিতিতে এই খাত আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে। নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে স্টকগুলির দাম।

বিনিয়োগের জন্য কেন সেরা হয়ে উঠছে এই খাত?

May 25, 2025 | 2:11 PM

গত এক বছরে, ভারতীয় প্রতিরক্ষা খাতে এক উল্লেখযোগ্য রূপান্তর দেখা গেছে। এত দিন যেখানে অস্ত্রশস্ত্র আমদানীতে এগিয়ে থাকত ভারত, সেখানে গত বছর থেকে বেড়েছে রপ্তানিও। উৎপাদনের ক্ষেত্রেও রেকর্ড ব্রেক করেছে। যার ফলে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম। কোভিড-১৯-পরবর্তী প্রাথমিক বুল রানের সময় থেকেই প্রতিরক্ষা স্টকগুলি দুর্দান্ত লাভ করেছে। তবে, সাম্প্রতিকতম পরিস্থিতিতে এই খাত আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে। নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে স্টকগুলির দাম।

বিশ্বব্যাপী চলমান উত্তেজনার আবহে, সামরিক প্রস্তুতির চাহিদা নতুন করে গতি পেয়েছে। এমনকি যেসব অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছে, সেখানেও অন্তর্নিহিত নিরাপত্তা সমস্যাগুলি নিয়ে চিন্তিত গোটা বিশ্বই। যেমন রাশিয়া-ইউক্রেন। তাই দীর্ঘমেয়াদী নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে দেশগুলিও প্রস্তুতি নিচ্ছে। চলছে প্রতিরক্ষা বাজেটের পুনর্গঠন। যার ব্যতিক্রম নয় ভারতও।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং সম্প্রতি এই খাতের উপর সরকারের দৃঢ় মনোযোগের উপর জোর দিয়ে জানান প্রতিরক্ষা রপ্তানি ২০১৩-১৪ অর্থবছরের ৬৮৬ কোটি টাকা থেকে ৩৪ গুণ বেড়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২৩,৬২২ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
প্রতিরক্ষা উৎপাদন এ বছর ১.৬০ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা। ২০২৯ সালের মধ্যে ৩ লক্ষ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারে। এই সংখ্যাগুলি কেবল লক্ষ্যমাত্রা নয়; এগুলি জাতীয় মানসিকতার আমদানিকারক থেকে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির বিশ্বব্যাপী সরবরাহকারী হয়ে ওঠার পরিবর্তনকে প্রতিফলিত করে।

সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষের সময় এই রূপান্তর আরও জোরদার হয়েছে, যেখানে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যতিক্রমী ক্ষমতা এবং কর্মক্ষম শক্তি প্রদর্শন করেছে। যা বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা রপ্তানির জন্য একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবেও স্থান দিয়েছে ভারতকে।

বিশ্বব্যাপী সামরিক ব্যয় এক নতুন মাইলফলকে পৌঁছেছে। স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI) অনুসারে, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা ব্যয় ২,৭১৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যা আগের বছরের তুলনায় ৯.৪% বেশি।

বিশ্বব্যাপী সামরিক খাতে ব্যয় এখন বিশ্বের জিডিপির প্রায় ২.৫%, যা প্রায় ১১০ ট্রিলিয়ন ডলার। এর অর্থ মোট প্রতিরক্ষা ব্যয় ২.৭ ট্রিলিয়ন ডলার। তুলনামূলকভাবে, ভারতের প্রতিরক্ষা রপ্তানি বর্তমানে ২.৭ বিলিয়ন ডলার। যা বিশ্ব প্রতিরক্ষা বাজারের মাত্র ০.১%। যদি ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রতিরক্ষা ব্যয় ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয় এবং ভারত তার অংশ ১% এ উন্নীত করে, তাহলে দেশের প্রতিরক্ষা রপ্তানি ৩০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে বলে আশা।

এটি ভারতীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলির জন্য বৃদ্ধির সম্ভাবনাকে তুলে ধরে। বর্তময়ানে ভারত বিশ্বব্যাপী শীর্ষ পাঁচটি সামরিক ব্যয়কারী দেশের মধ্যে রয়েছে। ২০২৪ সালে ৮৬.১ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে, যা আগের তুলনায় ১.৬% বেশি।

বিনিয়োগকারীদের জন্য এই খাত ভবিষ্যতে লাভজনক হতে পারে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা স্টকগুলিতে দীর্ঘমেয়াদী কাঠামোগত উত্থানের সূচনা তাই বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় লাভ এনে দিতে পারে।