
শ্রীনগর: আবারও কাশ্মীকে রক্তাক্ত করল সন্ত্রাসবাদ। পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপরে জঙ্গি হামলা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা দেশকে। এই হামলা কেবল নিরীহ পর্যটকদের উপরই আক্রমণ নয়, বরং কাশ্মীরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং লক্ষ লক্ষ কাশ্মীরীর জীবিকার উপর সরাসরি আক্রমণ। প্রতি বছর কোটি কোটি পর্যটক জম্মু-কাশ্মীরে ঘুরতে আসেন। জম্মু-কাশ্মীরের অর্থনীতি পর্যটক নির্ভর। প্রতি বছর কতজন পর্যটক শ্রীনগরে আসেন এবং সেখানকার অর্থনীতিতেই বা কতটা অবদান?
ভূস্বর্গ হিসেবে পরিচিত কাশ্মীরের পর্যটন শিল্প থেকে আয়ের পরিমাণ প্রায় ১২,০০০ কোটি টাকা। জম্মু-কাশ্মীরের জিডিপির ৭-৮ শতাংশই আসে পর্যটন থেকে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই আয় ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাবে বলেই আশা করা হয়েছিল। তবে এই জঙ্গি হামলা সেই উন্নয়ন যাত্রায় বাধা সৃষ্টি করেছে।
কাশ্মীরে পর্যটন সম্পর্কিত নানা পেশা রয়েছে, যেমন হোটেল, হাউস বোট, ট্যাক্সি পরিষেবা, গাইড, হস্তশিল্প। প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের জীবিকার উৎস পর্যটন। ডাল লেকে প্রায় ১,৫০০-এরও বেশি হাউসবোট চলে, ৩,০০০-এরও বেশি হোটেল রয়েছে। জঙ্গি হামলার জেরে এখন সব খালি হয়ে যাচ্ছে। বাতিল হচ্ছে সমস্ত বুকিং।
গুলমার্গ, সোনামার্গ, পহেলগাঁও এবং ডাল লেকের মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক আসেন। ২০২৪ সালে ২.৩৬ কোটি পর্যটক কাশ্মীরে এসেছিলেন, যার মধ্যে ৬৫,০০০-এরও বেশি বিদেশী ছিলেন। শুধুমাত্র গুলমার্গই ১০৩ কোটি টাকা রাজস্ব দিয়েছিল। এখন এই সমস্ত পর্যটনকেন্দ্র গুলি ভয় এবং অনিশ্চয়তার ছায়ায়।
কাশ্মীর কেবল পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্যই নয়, বলিউড এবং ওটিটি প্রযোজকদের কাছেও একটি প্রিয় শুটিং গন্তব্য। এছাড়াও, ডেস্টিনেশন ওয়েডিংয়ের ক্রমে চাহিদা বাড়ছে। অনেকেই বেছে নিচ্ছেন কাশ্মীরকে, যা পর্যটনকে আরও উৎসাহিত করেছে। এখন সিনেমা নির্মাতারাও পিছু হটতে শুরু করেছেন।