
সদ্য সমাপ্ত নিউ ফান্ড অফার বা NFO-তে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তুলেছে জিও ব্ল্যাকরক ফ্লেক্সি ক্যাপ মিউচুয়াল ফান্ড। তারপর চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর থেকেই আবার এই ফান্ডে বিনিয়োগের দরজা খুলে গিয়েছে। কিন্তু এত কিছুর মধ্যে আসল বিষয় কী জানেন? ভারতে যেমন ইন্টারনেট বিপ্লব নিয়ে এসেছিল জিও, এবার তাদের মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে আসতে চলেছে আরও এক বিপ্লব।
এর আগে জিও ব্ল্যাকরক মূলত নিফটির মতো কোনও সূচককে ট্র্যাক করে এমন প্যাসিভ মিউচুয়াল ফান্ড তৈরি করত। কিন্তু এই ফ্লেক্সি ক্যাপ মিউচুয়াল ফান্ড তাদের প্রথম অ্যাকটিভ মিউচুয়াল ফান্ড। এটি শুধু কোনও সূচককে অনুসরণ করবে না। এখানে ফান্ড ম্যানেজাররা সক্রিয় ভাবে স্টক বেছে নেবেন।
এই ফ্লেক্সি ক্যাপ মিউচুয়াল ফান্ডের মূল শক্তি হল এর ‘সিস্টেমেটিক অ্যাক্টিভ ইক্যুইটি’ মডেল। জেড ফান্ডসের চিফ ডিস্ট্রিবিউশন অফিসার মনীশ তানেজা বলছেন, ‘ব্ল্যাকরকের নিজস্ব আলাদিন এআই ইঞ্জিন প্রায় ৭০০-এরও বেশি ভারতীয় স্টককে রিয়েল-টাইম ডেটার ভিত্তিতে র্যাঙ্ক করে’। আর এই র্যাঙ্কিংয়ের পর ফান্ডের ম্যানেজাররা সেই সংস্থাগুলোর ফান্ডামেন্টালস, তাদের পরিচালনা ও স্টকের মূল্য দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।
অর্থাৎ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নির্ভুল ডেটা আর মানুষের অভিজ্ঞতা; এই দুইয়ের সমন্বয়েই তৈরি হয় পোর্টফোলিও। তানেজা মনে করেন, এই ফিউশন গতানুগতিক কৌশলের চেয়ে এই ফান্ডটিকে আলাদা করেছে।
ফান্ডটির একটি বড় সুবিধা হল এর নমনীয়তা। এটি লার্জ-ক্যাপ, মিড-ক্যাপ এবং স্মল-ক্যাপ, সব ক্ষেত্রেই বিনিয়োগ করতে পারে। আর এই ফান্ডের মোট সম্পদের ৬৫ থেকে ১০০ শতাংশ অর্থই ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করা হয়।
তবে সতর্কও থাকতে হবে। তানেজা ব্যাখ্যা করেছেন, এই ফান্ডের পোর্টফোলিওর প্রায় ৬০ শতাংশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্বারা পরিচালিত হয়। ভারতের বাজার কিছুটা অনুভূতি-ভিত্তিক হওয়ায় এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কোনও ডেটা সামান্য ভুল হলেই বাজারে একটা স্বল্প-মেয়াদি অস্থিরতা বাড়তে পারে। বাকি ৪০ শতাংশ নির্ভর করে মানুষের বিচক্ষণতার উপর। যা এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।
এই ফান্ডে ন্যূনতম ৫০০ টাকার এসআইপি করা যায়। এই ফান্ডের এক্সপেন্স রেশিওও বেশ কম, প্রায় ০.৫ শতাংশ। এটি প্রমাণ করে যে প্রযুক্তিনির্ভর এই বিনিয়োগ কৌশলটি ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত সহজলভ্য করা হয়েছে। ব্ল্যাকরকের প্রযুক্তি আর জিওর ডিজিটাল অভিজ্ঞতা দিয়ে তৈরি এই ফান্ড ভারতীয় মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থাগুলোর কাছে এক নতুন দিগন্ত খুলে দেবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কোথাও বিনিয়োগ করতে চাইলে সেই বিষয়ে যথাযথ তথ্যানুসন্ধান ও বিশ্লেষণ করুন। এই লেখা শুধুমাত্র শিক্ষাগত উদ্দেশ্যে। TV9 বাংলা বিনিয়োগের কোনও উপদেশ দেয় না।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: যে কোনও বিনিয়োগে বাজারগত ঝুঁকি রয়েছে। ফলে, আগে বিনিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত নথি সাবধানে পড়ে নেবেন। তারপর বিনিয়োগ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।