ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল করার শেষদিন ৩১ জুলাই অর্থাৎ আজ। অর্থমন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে লাস্ট ডেট মানে লাস্ট ডেটই। আয়কর রিটার্ন জমার সময়সীমা বাড়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। অর্থাৎ যাঁরা এখনও আয়কর রিটার্ন জমা করেননি, তাঁদের হাতে সময় মাত্র আজকের দিনটা। যে কোনও নাগরিক, যাঁদের অ্যাকাউন্ট অডিট করার প্রয়োজন নেই, তাঁদের আজকের মধ্যেই রিটার্ন ফাইল করতে হবে। দেরি হলে ৫ হাজার টাকা জরিমানা। সঙ্গে ফ্রি ভোগান্তি। আয় বছরে ৫ লক্ষ টাকার কম হলে জরিমানা ১০০০ টাকা। আর তার বেশি হলে ওই ৫ হাজার টাকা জরিমানাই চাপবে।
অনেকেই হয়তো এর মধ্যেই রিটার্ন ফাইল করে ফেলেছেন। তবে ভারতীয়দের মধ্যে, আরও ভাল করে বললে হয়তো বাঙালিদের একটা অদ্ভুত স্বভাব রয়েছে। আমরা অনেকেই দরকারি কাজ লাস্ট ডেটের জন্য ফেলে রাখি। একটা উদাহরণ দিলেই স্পষ্ট হবে। ২০২২-২৩ সালে ৭ কোটি ৫১ লক্ষ আয়কর রিটার্ন ফাইল হয়েছিল। ১ এপ্রিল থেকে ২৫ জুলাই, এই ১১৫ দিনে কমবেশি ৫ কোটি রিটার্ন ফাইল হয়। আর শেষ ৭ দিনে আড়াই কোটির বেশি রিটার্ন ফাইল হয়। শেষ ২ দিনের হিসেবটা ছিল প্রায় দেড় কোটির বেশি। অত্যধিক চাপ পড়ায় সেবার দফায় দফায় আয়কর দফতরের ওয়েবসাইট বসে গিয়েছিল। এবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ার আশঙ্কা করছেন কর বিশেষজ্ঞরা। আয়কর দফতর সূত্রে খবর, ২৬ জুলাই পর্যন্ত ৫ কোটির সামান্য বেশি আয়কর রিটার্ন ফাইল হয়েছে। ফলে শেষদিনে আরও এক কোটির বেশি রিটার্ন ফাইল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
একটা অদ্ভুত ব্যাপারের কথাও জানা যাচ্ছে। আয়কর রিটার্নে বহু করদাতা নিজেদের আয় কমিয়ে দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ আয়কর দফতরের। পাশাপাশি প্রচুর ভুয়ো টিডিএস ক্লেমের ঘটনাও চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। আয়কর দফতরের সতর্কতা, এ সমস্ত ঘটনায় নতুন আইনে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। যে টাকা আয়কর ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে বা যে টাকার ভুয়ো টিডিএস চাওয়া হচ্ছে, তার ২০০ গুণ পর্যন্ত জরিমানা চাপতে পারে। আয়কর রিটার্ন দাখিল করার পর ছোটখাটো ভুল অনেকেরই হয়। হয়তো সেই সময় কোনও একটা জিনিস মনে পড়ল না। এটা তো যে কারোরই হতে পারে, তাই না? এসব ক্ষেত্রে অবশ্য উপায় আছে। আয়কর রিটার্ন জমায় ভুল হলে সংশোধিত আইটিআর ফাইল করা যেতে পারে। তবে রিটার্নের ভেরিফিকেশন হওয়ার আগেই জমা করতে হবে সংশোধিত আয়কর রিটার্ন। ফলে আজই শেষ দিন। সময় শেষ হওয়ার আগেই করে ফেলুন নিজের আয়কর রিটার্ন। নাহলে ওই, কাঁধে চাপতে পারে জরিমানার বোঝা।