নয়া দিল্লি: করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা (Coromandel Express Accident) দিয়েছে চরম শিক্ষা। গত ২ জুন ওড়িশার বালেশ্বরে যে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে. তাতে ২৮৮ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি যাত্রী। এখনও অবধি ভুবনেশ্বরের এইমসে পড়ে রয়েছে বহু মৃতদেহ, যার শনাক্তকরণ হয়নি। সিগনালিংয়ে যান্ত্রিক গোলযোগ নাকি ইচ্ছাকৃতভাবেই দুর্ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তা জানতে শুরু হয়েছে সিবিআই (CBI) তদন্ত। একইসঙ্গে এই দুর্ঘটনার পরই ভারতীয় রেলে যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দুর্ঘটনার পরই জানা গিয়েছিল, করমণ্ডল এক্সপ্রেসে ছিল না কবচ ব্যবস্থা (Kavach System)। যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রকের তরফে এই সুরক্ষা ব্যবস্থা আনা হয়েছিল। কিন্তু বালেশ্বরের দুর্ঘটনার পরই রেলের পরিকাঠামোর আসল চিত্র সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, অধিংকাশ ট্রেনেই এখনও সুরক্ষা কবচ লাগানো হয়নি। যাত্রীদের মনে এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন, কোন কোন ট্রেনে কবচ সিস্টেম রয়েছে?
বিরোধী দল কংগ্রেসের দাবি, ভারতীয় রেলের মাত্র ২ শতাংশ ট্রেনে কবচ সুরক্ষা ব্য়বস্থা রয়েছে। তবে রেল সূত্রে খবর, দৈনিক ১৩১৬৯টি প্যাসেঞ্জার ট্রেন যাতায়াত করে দেশজুড়ে। এরমধ্যে কবচ সিস্টেম কেবল ৬৫টি লোকমোটিভে রয়েছে। ১৪৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রুটে মোট ১৩৪টি স্টেশনে রয়েছে কবচ ব্যবস্থা।
রেল মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে কেবল দক্ষিণ-মধ্য রেলওয়ে জ়োনেই কবচ ব্যবস্থা রয়েছে। মহারাষ্ট্র, তেলঙ্গানা, কর্নাটক ও অন্ধ্র প্রদেশের রুটের ট্রেনগুলিতে এই সুরক্ষা কবচ রয়েছে। মিশন রফতারের অধীনে দিল্লি-মুম্বই মেইন লাইন ও দিল্লি-হাওড়া মেইন লাইনেও কবচ সিস্টেম বসানোর কাজ চলছে। আগামী বছরের মধ্যেই এই সুরক্ষা কবচ বসানোর কাজ শেষ হয়ে যাবে।
জিপিএস ও জিপিআরএসের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েই ট্রেনের গতিবিধির রিয়েল টাইম তথ্য সংগ্রহ করা হয়। “ট্রেন টু ট্রেন’ এবং ‘ট্রেন টু কন্ট্রোল সেন্টার’ -র নীতিতেই এই অ্যান্টি কলিশন সিস্টেম কাজ করে।
ভারতীয় রেলওয়ের তরফে আনা কবচ সিস্টেমে চালকের ভুল, সিগনালের সমস্যা বা অন্য কোনও প্রযুক্তিগত বা যান্ত্রিক সমস্য়ার কারণে যদি দুটি ট্রেন মুখোমুখি চলে আসে, তবে আপনাআপনিই ব্রেক কষবে কবচ সিস্টেম। জিপিএস, জিপিআরএস ব্য়বহারে ট্রেনের সামনে থাকা অন্য় ট্রেনের উপস্থিতি বা গতিবিধি সেন্সরে ধরা পড়ে এই কবচ ব্যবস্থায়।