
একটা কথা শুনে থাকবেন আজকের প্রজন্ম অনেক ক্ষেত্রে ঋণের উপর ভরসা করে। সে একটা আইফোন কেনা হোক বা গাড়ি কেনা হোক। কিন্তু আসলেই কি অঙ্কটা এমন? দেশের আইফোন বা গাড়ির ক্রেতাদের মধ্যে বেশিরভাগই হয়তো ইএমআই মাধ্যমে এই জিনিসগুলো কেনে। কিন্তু এইগুলো ডেপ্রিসিয়াটিং অ্যাসেট। অর্থাৎ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দাম কমে এই ধরনের জিনিসগুলোর। কিন্তু এটা গাড়ি বা ফোন না হয়ে যদি বাড়ি বা ফ্ল্যাট হয় তখন?
একটা বাড়ি বা ফ্ল্যাট দেশের সাধারণ মানুষের কাছে শুধুমাত্র একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করা, এমন নয়। বলা যায় একটা বাড়ি বা একটা ফ্ল্যাট কেনা আজ দেশের সাধারণ মানুষের কাছে দীর্ঘমেয়াদি সম্পত্তি তৈরির একটা মাধ্যম। অর্থাৎ মাসিক কিস্তি ভরে দেশের মানুষ শুধু একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজছে এমন নয়। তারা আসলে বিনিয়োগও করছে।
ভারতের হাউসিং ফাইন্যান্সের বাজার বর্তমানে প্রায় ৩৩ লক্ষ কোটি। আগামীতে তা আরও বাড়বে। আর খুব দ্রুতই বাড়বে। ২০৩০ আর্থিক বর্ষে এই অঙ্ক ৭৮ লক্ষ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরাই। আর্কেড ডেভেলপারস লিমিটেডের সিএমডি অমিত জৈন বলছেন, দেশে গড় হোম লোনের অঙ্ক গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ লক্ষ টাকায়। মুম্বইয়ের মতো শহরে গড়ে তা ৯৯ লক্ষ। আর সম্পত্তির দাম যে হারে বাড়ছে, তাতে জৈন মনে করছেন এই যে বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনে রিয়েল এস্টেটে মানুষ বিনিয়োগ করছেন, তা শুধুমাত্র ঋণ, এমন নয়। অনেক ক্ষেত্রেই ঋণের পরিবর্তে তা সঞ্চয় বা সম্পদ হিসাবেই গণ্য হচ্ছে। কারণ, আগামীতে ওই সম্পত্তি বিক্রি করলে ওই ব্যক্তির হাতে আসবে প্রচুর অর্থ।
আবার সিসিআই প্রোজেক্টস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক রোহান খাটাউয়ের মতে, শহরগুলোতে নতুন পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়াও শহরগুলোয় হু হু করে বাড়ছে মেট্রো সংযোগ। আর সেই কারণেই দাম বাড়ছে রিয়েল এস্টেটের। ফলে সাধারণ মানুষ ইএমআইকে ঋণের কিস্তি হিসাবে না ভেবে বিনিয়োগ হিসাবেই ভাবছেন।
ফলে, হোম লোনের ধারণা খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। মধ্যবিত্ত পরিবার মাসিক কিস্তি দিয়ে ভবিষ্যতের সম্পদ তৈরি করছে। ঋণ হোক বা প্রথম বাড়ি, মাসিক কিস্তি কোটি কোটি ভারতীয়কে ঋণের টাকাকে সম্পদে পরিণত করতে সাহায্য করছে।