
আমাদের দেশের বিরাট সংখ্যক মানুষ মধ্যবিত্ত। বলা হয়ে থাকে ভারতের অর্থনীতির আসল চালক হল দেশের মধ্যবিত্তরাই। আর সেই মধ্যবিত্তর মধ্যেই আছি আমি, আছেন আপনিও। আর এই মধ্যবিত্ত জীবনে ঝড় ঝাপটা সামলাতে লাগে অনেকটা বেশি মানসিক শক্তি। অর্থনৈতিক চাপ, চাকরি নিয়ে চিন্তা ও বাবা-মা কিংবা স্ত্রী-সন্তানের দায়িত্বের মতো বিষয়ও রয়েছে এখানে। আর এত কিছুর মধ্যে সফল হতে গেলে প্রয়োজন বাড়তি কিছু অভ্যাস।
সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে যা আয় করেন, ব্যয় যেন তার চেয়ে কম হয়। এ ছাড়াও বেতন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনযাত্রার মান বাড়াবেন না। জীবনযাত্রার মান বাড়ালে অর্থনৈতিক চাপ বাড়বে আপনারই।
সময়ের সঙ্গে নিজেকে আপডেট করতে থাকুন। ক্রমাগত নিজের দক্ষতা বাড়ান। অনলাইন কোর্স বা বই পড়ার মাধ্যমে নতুন কিছু শিখতে থাকুন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাসও বাড়বে এবং পেশাগত জীবনে অনেকের থেকে এগিয়ে থাকবেন।
পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মী, সকলের সঙ্গেই সুসম্পর্ক বজায় রাখুন। কঠিন সময়ে এই সম্পর্কগুলিই আপনাকে মানসিক শক্তি যোগাবে।
তাৎক্ষণিক আনন্দের জন্য বড় লক্ষ্যকে বিসর্জন দেবেন না। আজকের ছোট ত্যাগ আগামীর বড় সাফল্যের ভিত্তি তৈরি করে। সঞ্চয় ও বিনিয়োগের জন্য এমন অভ্যাস খুব জরুরি।
ঝুঁকি এড়িয়ে যাওয়া সব সময় উচিত। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে ক্যালকুলেটেড রিস্ক নেওয়া দরকার। সব ঝুঁকি এড়িয়ে চলবেন না। যেমন ধরুন, চাকরির পাশাপাশি ছোট ব্যবসা শুরু করা বা সঠিক সময়ে চাকরি পরিবর্তন করা।
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে অবহেলা করবেন না। মনে রাখবেন, স্বাস্থ্যই আপনার সবচেয়ে বড় সম্পদ। নিয়মিত ব্যায়াম করুন, ভাল করে সময় মতো ঘুমান ও স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
নিজের সময় এবং শক্তিকে মূল্য দিন। যে কাজ বা অনুরোধ আপনার লক্ষ্যের সাথে মেলে না, সেই অনুরোধকে বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করুন। এই ভাবে অন্য কারও চাপিয়ে দেওয়া কাজের হাত থেকে আপনি বাঁচবেন। আর আপনার প্রয়োজনীয় সময় আপনি অন্যভাবে কাজে লাগাবেন।
ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করুন। একটি আপৎকালীন তহবিল তৈরি করুন আর সেই সঙ্গে আপনার ও আপনার পরিবারের স্বাস্থ্যবিমার নিন। আগে থেকে তৈরি থাকলে যে কোনও হঠাৎ সমস্যা মোকাবিলা সহজে করতে পারবেন আপনি।
যা আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে, তা নিয়ে অহেতুক চিন্তা করবেন না। বরং নিজের কাজ, দক্ষতা বা অর্থনৈতিক পরিকল্পনা অর্থাৎ যা যা আপনার হাতে রয়েছে সে দিকে মন দিন।
জীবনে যা কিছু ভাল, তার জন্য কৃতজ্ঞ থাকুন। কঠিন সময়ে হতাশ না হয়ে পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিন। সব সময় ইতিবাচক মনোভাব থাকলে আলাদা মানসিক পাওয়া যায় বলেন মনোবিদরা।
এই ধরনের অভ্যাস আপনার মানসিক শক্তি সময়ের সঙ্গে বাড়িয়ে তোলে। একটি একটি করে এই অভ্যাস মেনে চলার চেষ্টা করুন। শারীরিক শক্তির মতোই মানসিক শক্তিও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাবে আপনার।