
আচ্ছা আপনার কখনও মনে হয়েছে সেবি রেজিস্টার্ড যে সব সংস্থাগুলো রয়েছে তারা তাদের হাতে থাকা টাকা কী কাজে লাগায়? এতদিন এই ধরনের সংস্থাগুলো হাতে থাকা টাকা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে, ব্যাঙ্কে ডিপোজিট করে বা নতুন ব্যবসা বা ব্যবসা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করে। কিন্তু এবার এই সংস্থাগুলো বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছে মিউচুয়াল ফান্ডে। এমন অবস্থা আগে সেভাবে দেখা যায়নি। CMIE-এর তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এই বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে রেকর্ড ৩ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা। ১৯৯০-৯১ অর্থবর্ষের পর এটিই সর্বোচ্চ। কিন্তু হঠাৎ এই খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণ কী?
বাজারের অনিশ্চয়তা, নতুন ব্যবসার সীমিত সুযোগ ও ব্যাঙ্কের কম সুদের হার; এই তিনটি কারণই কর্পোরেট সংস্থাগুল মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করছে। ট্রাস্ট মিউচুয়াল ফান্ডের সিইও সন্দীপ বাগলা বলছেন, ‘কোম্পানিগুলি এমন বৃদ্ধির সুযোগ দেখছে না, যেখানে তারা তাদের হাতে থাকা অর্থ লাগামছাড়া ব্যয় করতে পারে’।
বর্তমানে ফাইন্যান্সিয়াল সংস্থা বাদ দিয়ে বাকি কোম্পানিগুলোর হাতে রেকর্ড ৭ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকা নগদে রয়েছে। এত নগদ থাকা সত্ত্বেও বিনিয়োগ না হওয়ার কারণও স্পষ্ট। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত দেশের শিল্প কারখানাগুলি তাদের উৎপাদন ক্ষমতার মাত্র ৭৫.৫ শতাংশ ব্যবহার করছে। অর্থাৎ, বর্তমান ক্ষমতাই পুরোপুরি কাজে লাগছে না। তাই নতুন কারখানা গড়ে তোলার ঝুঁকি নিচ্ছে না তারা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ হওয়া বেশিরভাগ অর্থই চলে যাচ্ছে ডেট ফান্ডে, ইক্যুইটিতে নয়। কারণ, সংস্থাগুলোর মূল লক্ষ্য হল মূলধন সংরক্ষণ করা। বেশি রিটার্ন নিয়ে এই মুহূর্তে তারা ভাবিতি নয়। এই কারণে ব্যাঙ্কের ৫.৬১ শতাংশ সুদের চেয়ে ডেট ফান্ডে সামান্য বেশি রিটার্ন সুরক্ষিত মনে করছে তারা। বাগলার মতে, অর্থনৈতিক রবৃদ্ধি শক্তিশালী না হওয়া পর্যন্ত এই প্রবণতা আগামী কিছুদিন চলতেই পারে।