মুম্বই: বিবাহ বিচ্ছেদের সব সময়ই তেতো। এক সময়, সারা জীবন একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন যে নারী-পুরুষ, তারাই বিচ্ছেদের সময় একে অপরের বিরুদ্ধে ছুড়তে থাকেন কাদা। আর যারা সেলেব, তাদের বিবাহ বিচ্ছেদের উপর তো নজর থাকে গোটা দুনিয়ায়। যেমন বর্তমানে জোর চর্চা চলছে রেমন্ড গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান, ধনকুবের ব্যবসায়ী গৌতম সিংঘানিয়া এবং তাঁর গত ৩২ বছরের বিবাহিত জীবনের সঙ্গী, নওয়াজ মোদী সিংঘানিয়ার বিচ্ছেদ নিয়ে। প্রায় এক সপ্তাহ আগে তাঁরা বিচ্ছেদের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এখন, গৌতম সিংঘানিয়ার বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনেছেন নওয়াজ মোদী। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে এবং তাঁদের মেয়েকে হেনস্থা করেছেন গৌতম। গৌতম সিংঘানিয়া অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
নওয়াজ মোদীর দাবি, মাস দুই আগে রাগের মাথায় তাঁকে এবং তাঁদের দুই মেয়ের একজনকে মারধর করেছিলেন গৌতম সিংঘানিয়া। নওয়াজ মোদী জানিয়েছেন, ১০ সেপ্টেম্বর এই ঘটনা ঘটেছিল। তবে, শুধু এই একবারই নয়, গৌতম অন্তত তিনবার তাঁকে নির্যাতন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ১০ সেপ্টেম্বর তাঁকে এবং তাঁদের বড় মেয়ে নিশাকে ঘুষি এবং লাথি মেরেছিলেন। যার জেরে তিনি পিঠে চোটও পেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন নওয়াজ। নওয়াজ মোদীর আরও দাবি, গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধ ছিল। কফিনে শেষ পেরেক ছিল গৌতম সিঘানিয়ার গার্হস্থ হিংসা। নওয়াজ মোদী জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে ৩০টিরও বেশি শৌচাগার রয়েছে। কিন্তু, নওয়াজ যে শৌচাগার ব্যবহার করতেন, গৌতম সিংঘানিয়া সেই শৌচাগারটিই ব্যবহার করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হতে হতে আচমকা তাঁকে মারধর করা শুরু করেছিলেন রেমন্ড কর্তা। নওয়াজ বলেছেন, “ও আমাকে লাথি মেরেছে, এমনকি আমাদের মেয়েকেও হেনস্থা করেছে। আমার পিঠে আঘাত লেগেছিল।”
নওয়াজ মোদীর দাবি, ওই ঘটনা ঘটেছিল গৌতম সিংঘানিয়ার জন্মদিনের পার্টির পরদিন ভোর ৫টায়। তিনি তাঁকে এবং তাঁদের কিশোরী মেয়ে নীহারিকাকে ১৫ মিনিট ধরে চড়-ঘুষি-লাথি মারেন। নওয়াজ আরও দাবি করেছেন, গৌতম সিংঘানিয়া তাঁকে বেশ কয়েকবার ঘরের চারপাশে ধাক্কা মেরে ফেলেও দিয়েছিলেন। মা এবং মেয়ে একে অপরকে রক্ষা করার চেষ্টা করছিলেন। এখানেই শেষ নয়, গৌতম সিংঘানিয়ার বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ এনেছেন নওয়াজ। তিনি বলেছেন, “মারধর করতে করতে হঠাৎ ও ঘটনাস্থল থেকে চলে গিয়েছিল। আমার মনে হয়েছিল, ও বোধহয় বন্দুক বা অন্য কোনও অস্ত্র নিয়ে আসছে। ” নওয়াজ মোদী জানান, সেই সময় নীহারিকা পুলিশকে ফোন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গৌতম ফিরে এসে বলেছিলেন, “পুলিশ তোমাদের সাহায্য করবে না। সবাই আমার পকেটে আছে।”
নওয়াজ মোদী জানিয়েছেন, ওই ঘটনার পর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। এরপর, তিনি তাঁর দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। সেই থেকে তিনি বাপের বাড়িতে আছেন। তিনি বলেছেন, “আমি আইনি আশ্রয় নিয়েছি। এর সঠিক বিবরণ আমি এখন আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারছি না। উভয় পক্ষের আইনজীবীরা একটি মীমাংসা করার চেষ্টা করছেন। আমি শুধুমাত্র আমার এবং আমার বাচ্চাদের জন্য যা ন্যায্য, তাই চেয়েছি।” সূত্রের খবর, তিনি গৌতম সিংঘানিয়ার মোট সম্পত্তির ৭৫ শতাংশ দাবি করেছেন।