
মৃত্যু কখনও বলে আসে না। কিন্তু কখনও কখনও মৃত্যুর সঙ্গে আসে অর্থনৈতিক জটিলতা। আর এই সমস্যা তখনই বড় হয় যখন দেখা যায় ওই মৃত ব্যক্তি তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোনও নমিনি রাখেননি। এমন পরিস্থিতিতে সেই ব্যক্তির সন্তানদের কী করণীয়?
আসলে সঠিক উত্তরাধিকারীর জন্য স্পষ্ট নিয়ম রয়েছে ব্যাঙ্কের। সঠিক পদ্ধতি আর কী কী কাগজপত্র লাগবে, তা জানলে এই প্রক্রিয়াটি আর ততটা কঠিন মনে হবে না।
প্রথমে সব গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র গুছিয়ে নিতে হবে। যে ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে তার মৃত্যু শংসাপত্র, সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য এবং আইনগত সম্পর্কের প্রমাণ যেমন আইনগত উত্তরাধিকারী শংসাপত্র বা উত্তরাধিকার শংসাপত্র লাগবে। এই শংসাপত্রগুলিই প্রমাণ করে টাকা দাবি করার অধিকার কার আছে। এগুলি সব যদি আপনার কাছে রেডি থাকে তাহলে ব্যাঙ্কে অযথা দেরি এড়ানো যায়।
যে ব্যাঙ্কের শাখায় অ্যাকাউন্টটি ছিল, সেখানে গিয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানান। ব্যাঙ্ক তখন আইনগত উত্তরাধিকারীর দাবি ফর্ম দেবে। সমস্ত সহায়ক নথি-সহ তা পূরণ করে জমা করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলি ক্ষতিপূরণ বন্ড বা হলফনামা চাইতে পারে। আসলে এই হলফনামা ভবিষ্যতের উত্তরাধিকারী-বিবাদ থেকে ব্যাঙ্ককে রক্ষা করে।
যদি অ্যাকাউন্টে নমিনি না থাকে এবং টাকার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হয়, তবে ব্যাঙ্ক প্রায়শই সিভিল কোর্ট থেকে জারি করা উত্তরাধিকার শংসাপত্রের ওপর জোর দেয়। এই শংসাপত্রটি আইনগতভাবে উত্তরাধিকারীদের মৃত ব্যক্তির আর্থিক সম্পদ অ্যাক্সেস করার অনুমতি দেয়। এটি পেতে কিছুটা সময় লাগলেও, আইনি অধিকারের জন্য এটিই সবচেয়ে শক্ত প্রমাণ।
যদি কোনও ব্যক্তির একাধিক বৈধ উত্তরাধিকারী থাকেন, তবে দাবিটি যৌথভাবে করতে হবে। অথবা, অন্য উত্তরাধিকারীদের কাছ থেকে No Objection Certificate বা এনওসি বা লিখিত সম্মতি নিয়ে একজনকে তাঁদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য অনুমোদন দিতে হবে। এই পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে স্বচ্ছতা থাকলে ভবিষ্যতে আইনি বিবাদ এড়ানো সম্ভব।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ছাড়াও, মৃত ব্যক্তির বিমা পলিসি, মিউচুয়াল ফান্ড বিনিয়োগ বা পেনশন অ্যাকাউন্ট থাকতে পারে। এইগুলিও অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখা উচিত। আসলে, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের প্রক্রিয়া সামান্য ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু মূল নথি—পরিচয়, সম্পর্ক এবং আইনি মালিকানার প্রমাণ—সব ক্ষেত্রেই একই থাকে।