No Risk Investments: ঝুঁকি চান না? তাহলে বিনিয়োগ করুন এই সব ক্ষেত্রে
Safe Investments: কোথাও বিনিয়োগ করা মানেই যে তার জন্য ঝুঁকি নিতে হবে এমনটা নয়। ঝুঁকি ছাড়া বিনিয়োগ করেও বার্ষিক ১২ থেকে ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকিহীন ভাবে মিউচুয়াল ফান্ড বা শেয়ারের মতো রিটার্ন পাবেন? জেনে নিন।

নিজের ভবিষ্যতের জন্য প্রত্যেক মানুষেরই বিনিয়োগ করা উচিত। যাঁরা উপায় করেন তাঁদের অনেকেই বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে থাকেন। মানুষ বিনিয়োগ বিভিন্ন ভাবে করেন। অনেকে ফিক্সড ডিপোজিট বা রেকারিং ডিপোজিটের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেন। অনেকে শেয়ার মার্কেট বা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করেন। অনেকে রিয়াল এস্টেট বা সোনাতেও বিনিয়োগ করে থাকেন। অনেকে আবার কোথাও বিনিয়োগ না করে নিজের অর্থ সেভিংস অ্যাকাউন্টেও রেখে দেন।
সাধারণভাবে আমরা জানি যে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে রিস্ক বেশি সেই ক্ষেত্রে রিটার্নও অনেক বেশি। যেমন, যাঁরা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করে তাঁরা অনেক বেশি ঝুঁকি নেন এবং তাঁদের এই বিনিয়োগ থেকে উপার্জনও অনেক বেশি। কিন্তু এমন কিছু বিনিয়োগও রয়েছে যেখানে বিনিয়োগে ঝুঁকি একদমই কম। কিন্তিউ রিটার্ন তুলনায় অনেকি বেশি।
১. সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম (Senior Citizen Savings Scheme)
চাকরই থেকে অবসরের পর সকলেই পেনশন পান এমনটা নয়। অনেকেই চাকরি জীবনে সঞ্চিত অর্থ দিয়ে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। সেক্ষেত্রে তাঁদের জন্য ফিক্সড ডিপোজিট খুব একটা ভাল অপশন নয়। কারণ ফিক্সড ডিপোজিটের সুদের হার অনেক ক্ষেত্রেই মূল্যবৃদ্ধির তুলনায় কম হয়। তাঁরা সেই ক্ষেত্রে সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগ করতে পারেন। সাধারণ ফিক্সদ ডিপোজিটের তুলনায় ১ থেকে ১.৫ শতাংশ বেশি সুদ পাওয়া যায় এখানে।
২. সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা
বিনিয়োগকারী কোনও মেয়ের বাবা বা মা হলে এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে মেয়ের নামে এই অ্যাকাউন্ট খোলা হবে তার বয়স কোনও ভাবেই ১০ বছরের বেশি হবে না। এখানে সর্বোচ্চ ১.৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করা যায়। এখানে বার্ষিক ৮ শতাংশ হারে সুদ মেলে। এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগের একটা বড় সুবিধা হল এই বিনিয়োগ একেবারে ট্যাক্স ফ্রি। ম্যাচিওর হয়ে গেলে যা তাকা পাওয়া যাবে তার উপর কোনও রকম ট্যাক্স দিতে হবে না। আর এইখানে বিনিয়োগ করলে ৮০সি-এ সুবিধাও মিলবে। এই স্কিমের ম্যাচিওরিটি ২১ বছরে হয়। আর স্কিমে বিনিয়োগের ২১ বছর হওয়ার আগে যদি কন্যা সন্তানের বিয়ে হয়ে যায় সেক্ষেত্রে এই স্কিম ম্যাচিওর হয়ে যাবে।
৩. ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট
এই স্কিমে সুদের হার ৭.৭ শতাংশ। ৫ বছর এই ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সময়। এখানে ৮০সি-র সুবিধা পাওয়া গেলেও ম্যাচিওরিটির পর প্রাপ্য টাকায় ট্যাক্স দিতে হবে।
৪. পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড
চাকরিজীবী থেকে চাকরিজীবীর সন্তান, সকলের জন্যই পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে বিনিয়োগ করা যেতে পারে। এখানে সুদের হার ৭.১ শতাংশ, যা ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেটের তুলনায় কিছুটা কম। এর লক-ইন পিরিয়ড ১৫ বছর। তারপর এর সময়কাল ৫ বছর করে বাড়ানো যায়। তাহলে মানুষ পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ডে কেন বিনিয়োগ করবে? কারণ এই ফান্ডে যেমন ৮০সি-র সুবিধা পাওয়া যায় তেমনই এখান থেকে সুদ পাওয়া যাবে তাতেও ট্যাক্স দিতে হয় না। এছাড়াও ম্যাচিওর হলে এখান থেকে যা টাকা মিলবে তাতেও কোনও সুদ দিতে হবে না। এছাড়াও এই ফান্ডে ৬ বছর হয়ে গেলে প্রয়োজনে ৫০ শতাংশ টাকা তোলা যায়। যাঁদের অনেক বেশি টাকা ট্যাস দিতে হয়, ট্যাক্স বাঁচানোর জন্য এটা তাঁদের কাছে একটা ভাল অপশন।
৫. ন্যাশনাল পেনশন স্কিম
যে সব চাকরিজীবীর বয়স বেশ অনেকটা কম। সদ্য চাকরি পেয়েছেন, এমন মানুষদের জন্য ন্যাশনাল পেনশন স্কিম ভাল অপশন। এখানে ম্যানুয়্যল চয়েসের মাধ্যমে ঠিক করা যায় কোনও খাতে কত টাকা বিনিয়োগ হবে। এখানে অটো চয়েসেরও একটা অপশন রয়েছে। অর্থাৎ, যিনি বিনিয়োগ করছেন তাঁর বয়সের হিসাবে বিনিয়োগের অঙ্ক ইক্যুইটি, অলটারনেট অ্যাসেট ও বন্ডের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। বয়স যত বাড়তে থাকে, ইক্যুইটিতে বিনিয়োগের পরিমাণ কমতে থাকে। এখানে সুদের হার বিনিয়োগের ধরণের উপর বদলাতে পারে। তবে যাদের বয়স কম, তাদের জন্য এই হার ১২ শতাংশের আশেপাশেই হয়। কিন্তু এই স্কিমের একমাত্র খারাপ দিক হল, এখানে বিনিয়োগ করলে সেই টাকা রিটায়ারমেন্ট পর্যন্ত আটকে থাকে। রিটায়ারমেন্টের পর ওই টাকার ৬০ শতাংশ তোলা যাবে। বাকি টাকা প্রতি বছর একটা নির্দিষ্ট হারে টাকা পাবেন বিনিয়োগকারী। প্রথমের ৬০ শতাংশের উপর কোনও ট্যাস না থাকলেও বাকি ৪০ শতাংশের উপর হিসাব ইনুযায়ী ট্যাক্স নেওয়া হয়।
৬. সোভেরেইন গোল্ড বন্ড (Sovereign Gold Bond)
এক্ষেত্রে রিটার্নের কোনও গ্যারান্টি নেই। কিন্তু ইতিহাস দেখলে বোঝা যাবে, সোনার দাম সাধারণত ১০ থেকে ১২ শতাংশ হারে বাড়তে থাকে। ছাড়াও সরকার প্রতিবছর এই মূল্যের উপর ২.৫ শতাংশ হারে সুদ দেয়। এ ছাড়াও এই বিনিয়োগ যদি ম্যাচিউরিটি পর্যন্ত রাখা যায় তাহলে, ট্যাক্স বেনিফিটও পাওয়া যায়।
