
হঠাৎ টাকার দরকার? চিকিৎসার খরচ বা অন্য কোনও জরুরি প্রয়োজনে অনেক সময়েই আমাদের পার্সোনাল লোন নিতে হয়। এতদিন ব্যাঙ্ক বা NBFC-ই ছিল ভরসা। কিন্তু এখন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া নতুন এক ডিজিটাল ব্যবস্থাকে অনুমোদন দিয়েছে। একে বলা হয় পিয়ার-টু-পিয়ার বা P2P লেন্ডিং প্ল্যাটফর্ম।
সহজ কথায়, এটি একটি অনলাইন বাজার। এখানে যাঁরা টাকা ধার দিতে চান আর যাঁদের টাকার প্রয়োজন, তাদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। একাধিক সংস্থার এমন প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যার মাধ্যমে তারা এই সার্ভিস দিয়ে থাকেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এদের নন ব্যাঙ্কিং ফাইন্যান্সিয়াল কর্পোরেশন-পিটুপি (NBFC-P2P) হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
ধরুন, আপনার ৫০ হাজার টাকা প্রয়োজন। আপনি কোনও P2P প্ল্যাটফর্মে এই টাকার জন্য আবেদন করলেন। ওই প্ল্যাটফর্ম আপনার সমস্ত নথি ও ক্রেডিট স্কোর যাচাই করবে। আবেদন মঞ্জুর করার মতো হলে আপনার লোনের সম্পূর্ণ বিবরণ ওয়েবসাইটে তুলে ধরা হবে। এরপর একাধিক লগ্নিকারী কিছুটা কিছুটা করে ওই ৫০ হাজার টাকা জমা করবেন। আর পুরো টাকা জমা হলেই তা আপনার অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। আপনাকে শুধু প্রতি মাসে ওই প্ল্যাটফর্মে ইএমআই জমা করতে হবে। অর্থাৎ, একসঙ্গে একাধিক ব্যক্তি আপনাকে লোন দেবে।
লোন নিলে নিজের ক্রেডিট স্কোর নিয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার নিয়ম অনুযায়ী, সমস্ত P2P সংস্থাকে প্রতি ১৫ দিন অন্তর আপনার লোন সংক্রান্ত তথ্য ক্রেডিট ইনফরমেশন কোম্পানিকে বা CIC-কে পাঠাতে হয়।
সঠিক সময়ে EMI জমা দিলে আপনার ক্রেডিট স্কোর সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী বাড়তে থাকবে বাড়বে। অন্যদিকে, EMI দিতে দেরি হলে বা ইএমআই মিস হলে আপনার ক্রেডিট স্কোর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্যাঙ্ক থেকে লোন না পাওয়ার মতোই, এখানেও আপনার রেকর্ডে খারাপ প্রভাব পড়বে।
দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুযায়ী, আপনি সব P2P প্ল্যাটফর্ম মিলিয়ে সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন। আর এই লোনের মেয়াদ ৩৬ মাসের বেশি হবে না। তাই পরের বার লোনের জন্য আবেদন করার আগে, ব্যাঙ্ক ও NBFC-র পাশাপাশি এই প্ল্যাটফর্মগুলির সুদের হারও অবশ্যই তুলনা করে দেখুন। তবে যেখানে থেকেই লোন নিন না কেন, লোন সর্বদা সঠিক সময়ে পরিশোধ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।