
দেশজুড়ে ক্রমশই বাড়ছে পার্সোনাল লোনের চাহিদা। আর সেই কারণেই ঠিক জায়গা থেকে ঠিক লোন নেওয়া সব সময় আপনার ক্রেডিট হিস্ট্রি বা অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের উপর বিরাট প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে, যে কোনও লোন নেওয়ার আগে আপনাকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনা করতে হবে। বিশেষত, সুদের হার, প্রসেসিং ফি, আপনার নিজের ক্রেডিট প্রোফাইল ও ঋণের যোগ্যতার মতো বিষয়গুলি খুঁটিয়ে দেখা অত্যন্ত জরুরি।
সুদের হার ব্যাঙ্ক বা এনবিএফসি অনুযায়ী বদলে যায়। এ ছাড়াও আপনার ক্রেডিট স্কোর, আপনার মাসিক পরিশোধের ক্ষমতা ও ক্রেডিট হিস্ট্রির উপর নির্ভর করেও সুদের হার বদলে যায়। ফলে শুধুমাত্র সুদের হার নয়, আপনার ঋণের জন্য মোট কত খরছ হচ্ছে, সেটাও হিসাব করতে হবে। কারণ, প্রসেসিং ফি, ফোর ক্লোজার পেনাল্টি ইত্যাদি যোগ করলে ঋণের খরচ অনেক সময় অনেকটা বেড়ে যেতে পারে।
সাধারণত, প্রসেসিং ফি হিসাবে ব্যাঙ্কগুলো মোট ঋণের পরিমাণের উপর ০.৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ ও জিএসটি নিয়ে থাকে। এ ছাড়াও আপনি যদি সময়ের আগে আপনার ঋণ শোধ করতে চান, তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা চাপতে পারে। এ ছাড়াও সময়মতো ইএমআই জমা করতে না পারলে পেনাল্টি, বাড়তি ফি দিতে হয়। এ ছাড়াও বেড়ে যায় আইনি জটিলতা ও ক্ষতি হয় আপনার ক্রেডিট স্কোরের।
লোন নেওয়ার বাকি ক্ষেত্রগুলোর পাশাপাশি আপনার ক্রেডিট স্কোর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনার ক্রেডিট স্কোর ৭৫০ বা তার বেশি হয়, তাহলে সুদের হার আপনার জন্য কিছুটা কম হতে পারে। যে ব্যাঙ্ক বা এনবিএফসি আপনাকে ঋণ দেবে তারা আপনার উপার্জন ও ঋণের অনুপাত বিশ্লেষণ করেন। এই অনুপাত সাধারণত ৩৫ শতাংশ বা তার কম হলে ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এ ছাড়াও আপনি কোন সংস্থায় চাকরি করেন, সেটার উপরও অনেক কিছু নির্ভর করে।
কোনও লোন অনেকদিনের জন্য নিলে তাতে আপনার ইএমআই অনেকটা কম হয়। যদিও এই ক্ষেত্রে মোট সুদের পরিমাণ অনেকটা বেশি হয়। আবার কম দিনের জন্য লোন নিলে মাসিক কিস্তির পরিমাণ অনেকটা বেশি হলেও আপনার লোনের মোট খরচ অনেক কমে যায়।
লোন নেওয়ার আগেই ফোরক্লোজার চার্জ বা আগেভাগে টাকা শোধ করে দেওয়ার খরচ সম্পর্কে জেনে নেওয়া ভাল। কারণ, লোন চলাকালীন বেশ কিছুটা টাকা যদি আপনি পরিশোধ করেন, তাহলে আপনার লোন অনেক দ্রুত শোধ হয়ে যায়। আর সেই কারণেই এই চার্জ সম্পর্কে আগেভাগে জেনে নেওয়া ভাল। এ ছাড়াও ওই ব্যাঙ্কে আপনার স্যালারি অ্যাকাউন্ট থাকলে আপনি তাদের সঙ্গে নিজের ইচ্ছামতো নেগোশিয়েশন করতে পারেন।
আর্থিক পরামর্শদাতারা বলছেন, ব্যক্তিগত ঋণে অতিরিক্ত সুদের হার, ঋণের ফাঁদে পড়ার ঝুঁকি থাকে। এ ছাড়াও এই ঋণের কারণে ক্রেডিট স্কোরে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। আসলে লোন নেওয়ার সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র কম সুদের হারের উপর নির্ভর করে, এমন নয়। লোনের মোট খরচ, আপনার প্রোফাইল, আপনার ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা ও কী কারণে ঋণ নিচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে।