PM Narendra Modi: কর্পোরেট চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজে ঝুঁকছে তরুণ প্রজন্ম, কী বলছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী?

Narendra Modi On Organic Farming: অর্গানিক ফার্মিং মূলত ভারতের ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান ও আধুনিক বাস্তুতন্ত্রের নীতির উপর নির্ভরশীল। এখানে রাসায়নিক সার বা কীটনাশকের ব্যবহার হয় না। বরং, ক্ষেতের ফসল, গাছপালা ও পশুসম্পদ সহাবস্থান করে জৈব বৈচিত্র্য বজায় রাখে।

PM Narendra Modi: কর্পোরেট চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজে ঝুঁকছে তরুণ প্রজন্ম, কী বলছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী?
চাকরি ছেড়ে চাষ, দেখে এলেন প্রধানমন্ত্রী!Image Credit source: https://www.linkedin.com/in/narendramodi/

Dec 03, 2025 | 6:46 PM

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর লিঙ্কডইন পোস্টে একটি বিরাট বদল বা পরিবর্তনের কথা তুলে ধরলেন। তিনি লিখছেন, চলতি বছরের ১৯ নভেম্বর তিনি গিয়েছিলেন তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোরে। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় সাউথ ইন্ডিয়া ন্যাচারাল ফার্মিং সামিট ২০২৫ থেকে এই নতুন দিগন্তের সূচনা।

কোয়েম্বাটোর, যা ভারতের MSME মেরুদণ্ড হিসেবে পরিচিত, সেখানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই সাউথ ইন্ডিয়া ন্যাচারাল ফার্মিং সামিট ২০২৫। এই অনুষ্ঠানের পিছনে রয়েছেন একটা নতুন কৃষক কমিউনিটি। নতুন এই কৃষক কমিউনিটি একাধিক নতুন কৌশল প্রয়োগ করছেন চাষে, একে বলা হচ্ছে অর্গানিক ফার্মিং। এর ফলে পূরণ হচ্ছে খাদ্যের চাহিদা ও বাড়ছে উৎপাদনও।

অর্গানিক ফার্মিংয়ের মন্ত্র কী?

অর্গানিক ফার্মিং মূলত ভারতের ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান ও আধুনিক বাস্তুতন্ত্রের নীতির উপর নির্ভরশীল। এখানে রাসায়নিক সার বা কীটনাশকের ব্যবহার হয় না। বরং, ক্ষেতের ফসল, গাছপালা ও পশুসম্পদ সহাবস্থান করে জৈব বৈচিত্র্য বজায় রাখে। মাটির স্বাস্থ্য বাড়াতে খামারের অবশিষ্টাংশ পুনর্ব্যবহার করা এবং মাটিকে আরও উর্বর করা, আগাছা দমন করা ও মাটির আদ্রতা সংরক্ষণ করার উপর জোর দেওয়া হয়।

মোদী জানিয়েছেন, এই সামিট তাঁর স্মৃতিতে চিরকাল থাকবে। কারণ, এটি ভারতের কৃষকদের আত্মবিশ্বাস এবং কল্পনার একটি নতুন দিক নির্দেশ করে। এই দৃষ্টিভঙ্গি কেবল কৃষকদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।

কারা ফিরছেন নিজের শিকড়ে?

আশ্চর্যজনকভাবে, বিভিন্ন পটভূমির মানুষ অর্গানিক ফার্মিংয়ে ঝুঁকছেন। বিজ্ঞানী, কৃষক সংগঠনের নেতা, ফার্স্ট জেনারেশন গ্র্যাজুয়েট ও কর্পোরেটের দারুণ স্যালারির চাকরি ছেড়ে আসা মানুষও রয়েছেন এর মধ্যে। এই কর্পোরেট কর্মীদের নিজের শিকড়ে ফিরে আসা প্রমাণ করে যে, কৃষি এখন আর কেবল গ্রামীণ ভারতের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কোনও পেশা নয়। এটি দিনে দিনে আগামীর পেশা হয়ে উঠছে।

এঁদের মধ্যে একজন ১০ একর জমিতে কলা, নারকেল, পেঁপে, গোলমরিচ ও হলুদ চাষ করেন। তিনি ৬০টি দেশি গরু ও ৪০০টি ছাগলও পালন করেন। আরেকজন ম্যাপিল্লাই সাম্বা ও কারুপ্পু কাভুনির মতো স্থানীয় ধান সংরক্ষণ করেছেন। যা থেকে তৈরি হচ্ছে প্রোটিন বার, হেলথ মিক্স, চকোলেট ও মুড়ি।

বিজ্ঞান আর উদ্যোগের মেলবন্ধন

আর একজন ১৫ একর জমিতে অর্গানিক ফার্ম চালাচ্ছেন এবং ৩ হাজারের বেশি কৃষককে প্রশিক্ষণও দিয়েছেন। তাঁর খামার থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ টন সবজি সরবরাহ হয়। সবথেকে উল্লেখযোগ্য দিক হলো প্রযুক্তির ব্যবহার। একজন বায়োটেকনোলজি বিশেষজ্ঞ ৬০০ জন মৎস্যজীবীকে কর্মসংস্থান দিয়ে শৈবালভিত্তিক জৈব সার (Seaweed-based Biofertilizer) তৈরি করাছেন। অপর একজন তৈরি করেছেন পুষ্টিসমৃদ্ধ জৈব সার, যা মাটির স্বাস্থ্য বাড়াতে সাহায্য করে।

কেন জরুরি অর্গানিক ফার্মিং?

বিগত কয়েক দশক ধরে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের উপর নির্ভরতা বেড়েছে, যার ফলে মাটির উর্বরতা ও আর্দ্রতা কমেছে। চাষের খরচও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। অর্গানিক ফার্মিং এই সমস্যাগুলির সরাসরি সমাধান করে। পঞ্চগব্য, জীবামৃত, বীজামৃত এবং মালচিংয়ের ব্যবহার রাসায়নিকের সংস্পর্শ কমায় ও কমে যায় খরচও। এছাড়াও এটি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে।

কেন্দ্রীয় সরকারও ন্যাশনাল মিশন অন ন্যাচারাল ফার্মিং-এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ কৃষককে এই পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত করেছে। কিষান ক্রেডিট কার্ড এবং পিএম কিষানের মতো প্রকল্পগুলিও এই ক্ষেত্রে বড় ভরসা।

আপনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বার্তা

প্রধানমন্ত্রী কৃষকদের ‘এক একর, এক ঋতু’ দিয়ে শুরু করার পরামর্শ দিয়েছেন। অর্থাৎ, ছোট প্লট থেকেই আত্মবিশ্বাস তৈরি হবে। তিনি সাধারণ মানুষের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন। বিজ্ঞান, উদ্যোগ ও সম্মিলিত কর্মপ্রয়াস কোয়েম্বাটোরে যে পথ দেখাল, তা আগামীতে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন আরও বাড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।