
কলকাতা: গরিব কৃষক পরিবারে জন্ম। ছোট থেকেই পরিবারে দারিদ্রের ছায়া। কিন্তু, সেই কৃষক পরিবারের সন্তানই শেয়ার মার্কেট থেকে তুলেছেন সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা। কথা হচ্ছে রামদেও আগরওয়ালকে নিয়ে। তাঁর বিনিয়োগের কৌশল নিয়ে আজও চর্চা চলে দালাল স্ট্রিটে। পড়াশোনার সূত্রে তিনি যখন মুম্বইয়ের হস্টেলে থাকতে শুরু করেন তখন থেকেই তাঁর শেয়ার বাজারের প্রতি আগ্রহ জন্মায়। তার আগে অল্প অল্প করে সঞ্চয়ের হাতও পাকিয়ে নিয়েছেন বাবার পরামর্শ মেনে। সূত্রের খবর, তিনি যে হস্টেলে থাকতেন সেই হস্টেলেই থাকতেন বিখ্যাত শেয়ার বিশেষজ্ঞ মোতিলাল অসওয়ালও। যদিও তিনি তখনও গোটা দেশে এইভাবে পরিচিতি পাননি। কিন্তু, ছাত্রাবস্থা থেকে তাঁরও ছিল শেয়ার বাজারে আগ্রহ। এই আগ্রহের মোতিলাল ও রামদেওয়ের বন্ধুত্বের সেতুবন্ধনটা আরও পাকা হয়।
হস্টেলে থাকার সময়েই দুইজনে শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। ততদিনে নিজের যা ক্ষুদ্র সঞ্চয় ছিল সবটাই শেয়ারে লাগিয়ে দেন রামদেও। ১৯৯০ সালের মধ্যে তা বেড়ে হয়ে যায় ১০ লক্ষ। ততদিনে তিনি আবার বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে ব্রোকারও হয়ে গিয়েছেন তিনি। এরইমধ্যে নব্বইয়ের দশকে ততক্ষণে শুরু হয়ে গিয়েছে হর্ষদ মেহতার ‘বুল রান’। হু হু করে বেড়েছিল প্রচুর স্টকের দাম। কিন্তু, তাঁর দুর্নীতি ফাঁস হতে সময় লেগে গিয়েছিল ১৯৯২ পর্যন্ত সময়। কিন্তু, ততদিনে বিনিয়োগকারীদের পকেটে এসে গিয়েছে মোটা টাকা।
ওই সময়ে ১০ রামদেও আগারওয়ালের বিনিয়োগ করা দশ লক্ষ টাকা বেড়ে হয়ে গিয়েছে ৩০ কোটি টাকা। ১৯৯২ সালে যখন হর্ষদ মেহতার স্ক্যাম সামনে আসে তখন শেয়ার বাজারে বড়সড় পতন দেখা যায়। রামদেওর ৩০ কোটি কমে হয়ে যায় ১০ কোটি। এরপরই তিনি তাঁর বিনিয়োগের কৌশলে বদল আনেন। যান আমেরিকা। সেখানে আবার তাঁর পরিচয় হয় ওয়ারেন বাফেটের সঙ্গে। বদল আনেন নিজের বিনিয়োগ পোর্টফোলিওতে। যদিও সেই সময় পর্যন্ত তাঁর ১০ কোটি খাটছিল ২২৫ কোম্পানিতে। কিন্তু, আমেরিকা থেকে ঘুরে আসার পর ২২৫ কোম্পানি থেকে তা কমে দাঁড়ায় ১৫ কোম্পানিতে। ১৯৯৬ সালে তিনি তিনি হিরো হোন্ডার শেয়ার কেনেন ৩০ টাকায় প্রতি স্টকের দামে। ২০১৬ সালে তিনি তা বেচে দেন ২৬০০ টাকার দরে। একইসঙ্গে ইনফোসিসের শেয়ারে টাকা খাটিয়ে ১২ গুণ লাভ করেন। লাভ করেন EICHER থেকেও। ২০১৮ সালে ফোর্বসের হিসাব বলছে তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ সাড়ে সাত হাজার কোটি।
বিঃ দ্রঃ – এটি একটি শেয়ার বাজার এবং বিনিয়োগ সম্পর্কিত শিক্ষামূলক প্রতিবেদন। এই প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য কখনই বিনিয়োগে উৎসাহিত করা বা মুনাফা কামানোর সহজ উপায় খুঁজে দেওয়া নয়। শেয়ার বাজারের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানানোই এই প্রতিবেদনের অন্যতম লক্ষ্য। উল্লেখ্য, শেয়ার বাজারের বিনিয়োগ সর্বদাই ঝুঁকিুপূর্ণ।