
১৬ ডিসেম্বর, ডলারের তুলনায় টাকার দাম নেমেছিল রেকর্ড ৯১ টাকা ১৬ পয়সায়। ২০২৫ সালে এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের মুদ্রার পারফরম্যান্স সবথেকে খারাপ। স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন— তবে কি দেশের অর্থনীতি টলমল?
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা অবশ্য বলছেন, ভয় পাওয়ার কারণ নেই। তাঁর যুক্তি, গত ১০-২০ বছরের ইতিহাস দেখলে দেখা যাবে টাকার দাম বছরে ৩ থেকে ৩.৪ শতাংশ পড়েই থাকে। এ বছর পতন ৪.৬৮ শতাংশ হলেও ভারতের ‘এক্সটার্নাল সেক্টর’ যথেষ্ট মজবুত।
টাকার দাম পতনে তিনটি কারণ স্পষ্ট। প্রথম, বিশ্ব বাজারে ডলারের বাড়বাড়ন্ত। দ্বিতীয়, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা টাকা তুলে নিচ্ছেন। তৃতীয়, ট্রাম্পের সম্ভাব্য শুল্ক নীতির আতঙ্ক।
আপনি হয়তো ভাবছেন ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কেন হস্তক্ষেপ করছে না? গভর্নর স্পষ্ট জানিয়েছেন, টাকার দাম বাজারই ঠিক করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক তখনই ময়দানে নামবে, যখন বাজারে ‘অস্বাভাবিক অস্থিরতা’ দেখা দেবে। আসলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এখন কিছুটা নমনীয়।
টাকার দাম কমলেও নভেম্বরে বাণিজ্য ঘাটতি পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। যা প্রায় ২৪.৫৩ বিলিয়ন ডলার। সোনা ও তেলের আমদানিও কমেছে। উল্টোদিকে আমেরিকায় ভারতের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। ভারতের হাতে এখন ৬৯০ বিলিয়ন ডলারের বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার রয়েছে, যা দিয়ে টানা ১১ মাসের আমদানি খরচ মেটানো সম্ভব।
ভারতের অর্থনীতির উপর এখনও সংকট রয়েছে। কিন্তু এটাও ঠিক যে, ভয়ের মেঘ কাটছে। ঋণের তুলনায় ভারতের সঞ্চয় যথেষ্ট শক্তিশালী। আপাতত তাই বিশ্ববাজারের ধাক্কায় টাকার ওঠানামা চললেও, ভিতটা শক্ত বলেই দাবি করছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক।