মুম্বই: অনেক উত্থান-পতনের সাক্ষী থেকেছে দালাল স্ট্রিট। করোনা মহামারীতে মৃত্যুর লহরের সঙ্গে সমানুপাতিক রক্তক্ষরণ হয়েছে শেয়ার বাজারে। তারপরেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আকাশ ছুঁয়ে সে সময় শেয়ার বাজারই অন্তত আশা দেখিয়েছিল এভাবেও ঘুরে দাঁড়ানো যায়। কিন্তু যুদ্ধের কাছে কে আর জেতে? বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে রুশ অভ্যুত্থানের পরই সেই ঘুরে দাঁড়ানোর মেরুদণ্ডই ভেঙে গেল শেয়ার বাজারের। এমনটাই অন্তত মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। এ দিন বাজার খুলতেই সেনসেক্স ২০০০ পয়েন্ট এবং নিফটি প্রায় সাড়ে ৪০০ পয়েন্ট পড়ে। আর দিনের শেষে সেনসেক্স ২৭০০ পয়েন্ট ও নিফট ৮১৫ পয়েন্ট পড়ে বাজার বন্ধ হয়। ২০২০ সালে মার্চ মাসের পর এতবড় পতন দেখা গেল শেয়ার বাজারে।
বৃহস্পতিবার বাজারের দুই সূচক সেনসেক্স ৪.৭২ শতাংশ পড়ে ৫৪,৫৩০ অঙ্ক এবং নিফটি ৪.৭৮ শতাংশ পড়ে ১৬২৪৮ অঙ্কে পৌঁছয়। একদিনে ১৩.৪৭ লক্ষ কোটি টাকা খুইয়ে ফেলেন লগ্নিকারীরা। বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের মোট শেয়ার মূলধন ২৫৫ লক্ষ কোটি থেকে এক ধাক্কায় নেমে দাঁড়ায় ২৪২ লক্ষ কোটি টাকা। এদিন এমন কোনও সেক্টর ছিল না, যার রং লাল। ব্য়াঙ্ক ৮.২৬ শতাংশ, অটো ৬.২৬ শতাংশ পতন লক্ষ্য করা যায়। সবচেয়ে বেশি যে শেয়ারটি পতন হয়েছে তা হল টাটা মোটর। ১০.৭১ শতাংশ পড়ে দাঁড়ায় ৪২৫টাকায়। এছাড়াও উল্লেখযোগ্যভাবে দাম পড়েছে ইন্ডাসিন্ড ব্যাঙ্ক, গ্রাসিম ইন্ডাস্ট্রিজ, জেএসডব্লিউ শেয়ারে।
মার্কেট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদি না ১৬,৪০০ অঙ্ক ধরে রাখতে পারে নিফটি পৌঁছবে ১৬,০০০ গণ্ডিতে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের পরিস্থিতি অনুযায়ী বেশ কিছু দিন বাজারে অস্থিরতা থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলার দাম পৌঁছেছে অপরিশোধিত তেলের। সোনার দামও বেড়েছে। পাশাপাশি পতন হয়েছে ডলার প্রতি টাকার। এ সবই ইঙ্গিত বাজারকে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে।
এদিন, রাশিয়ার শেয়ার বাজারও উল্লেখযোগ্য পতন দেখা গিয়েছে। পুতিনের সেনা অভ্যুত্থানের খবরে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে রুশ শেয়ার বাজার। জানা গিয়েছে, প্রায় ৪৫ শতাংশ পতন বাজার সূচকের। ২০০৯ সালের পর বাজারে এমন পতন দেখল রুশ নাগরিকরা। প্রায় ২৫৯০০ কোটি ডলার একাধাক্কায় মুছে গেছে শেয়ার বাজার থেকে। এশিয়া, ইউরোপ-সহ গোটা বিশ্ব বাজারে একই মন্দা লক্ষ্য করা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘মোদীজি পুতিনের সঙ্গে কথা বললে তিনি সাড়া দেবেন,’ যুদ্ধে ইতি টানতে ভারতের সাহায্যপ্রার্থী ইউক্রেন