
শপিং করতে ভাল লাগে তো? শুধু আপনার কেন, বেশিরভাগ মানুষেরই শপিং করতে ভাল লাগে। কারও জামাকাপড়, কারও সাজের জিনিস, আবার কারও খেলার সরঞ্জাম। কিন্তু এই আনন্দের সঙ্গে বিষ হাতে নিয়ে ফিরছেন না তো? আমেরিকার এক শীর্ষ অ্যালার্জিস্টের সতর্কতা, কেনাকাটার পর ক্যাশিয়ারের হাত থেকে যে সাদা বিলটি আপনি নিচ্ছেন, তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য নীরব ঘাতক। নিউ ইয়র্ক সিটির ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ তানিয়া ইলিয়ট স্পষ্ট করে বলেছেন, যেন এই ধরনের রসিদ স্পর্শ না করা হয়। কিন্তু এই সামান্য রসিদ এড়িয়ে চলার কথা কেন বলছেন তিনি?
বেশিরভাগ শপিং রসিদ তৈরি হয় বিশেষ এক থার্মাল কাগজ দিয়ে। এই কাগজে লোড করা থাকে বিসফেনল এ বা BPA ও বিসফেনল এস বা BPS-এর মতো বিষাক্ত রাসায়নিক। ডাঃ ইলিয়ট ব্যাখ্যা করেছেন, এই বিষাক্ত রাসায়নিক অত্যন্ত দ্রুত আপনার রক্তে মিশে যেতে পারে। এইগুলো হল ‘হরমোন ডিসরাপ্টর’। এর ফলে প্রজনন ক্ষমতা, হরমোনের ভারসাম্য এবং এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কোনও ক্যানজাত খাবারে যতটুকু BPA থাকে, একটি রসিদে তার চেয়ে এক হাজার গুণেরও বেশি রাসায়নিক থাকতে পারে। একটা ভুল ধারণা রয়েছে যে প্লাস্টিকের বোতলই প্রধান বিপদ। কিন্তু মিসৌরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, আসল বিপদটা লুকিয়ে আছে এই কাগজের স্লিপে। আরও ভয়ঙ্কর তথ্য: হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা সানস্ক্রিন ব্যবহারের ঠিক পরই যদি আপনি রসিদ ধরেন, তবে BPA শোষণ বহুগুণ বেড়ে যায়!
এই মারাত্মক রাসায়নিকের বিপদ থেকে বাঁচতে আপনি কয়েকটি সহজ পদক্ষেপ নিতে পারেন। প্রথমত, দোকানে সবসময় ডিজিটাল রসিদ চাইবেন। হাতে রসিদ নেওয়া বন্ধ করুন। দ্বিতীয়ত, যদি কোনওভাবে রসিদ হাতে নিতেই হয়, তবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন না। রসিদ ছোঁয়ার সঙ্গে সঙ্গে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন। স্প্যানিশ বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ভুল করেও রসিদ কুঁচকে ডাস্টবিনে ফেলবেন না বা ব্যাগের মধ্যে রাখবেন না। যত কম স্পর্শ করবেন, ততই নিরাপদ থাকবেন।