মুম্বই: বয়স শুধুমাত্র একটা সংখ্যা। সাধারণত এই জনপ্রিয় প্রবাদটি ব্যবহার করা হয় কোনও বয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রে। কিন্তু, এই ক্ষেত্রে এই প্রবাদটি ব্যবহার করা হচ্ছে এক কিশোরের জন্য। যখন শিশুরা তাদের স্কুলের পড়াশোনা, পরীক্ষা এবং পরীক্ষার নম্বর নিয়ে ব্যস্ত থাকে। সেই বয়সেই এই কিশোর নিজের এক সংস্থা চালু করেছিল। আমরা তিলক মেহতার কথা বলছি। মাত্র ১৩ বছর বয়সে সে এই আশ্চর্য কীর্তি স্থাপন করেছিল।
মামার বাড়িতে বেড়াতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তাঁর মাথায় প্রথম এক নয়া উদ্যোগ স্থাপনের ভাবনা এসেছিল। সামনে পরীক্ষা ছিল। তাই বইপত্র নিয়েই মামাবাড়ি গিয়েছিল তিলক। কিন্তু, সেখান থেকে ফিরার সময়, বইপত্র সেখানেই ফেলে এসেছিল। পরীক্ষার পড়ার জন্য বইগুলি তার তাদের প্রয়োজন ছিল। সে মরিয়া হয়ে বিভিন্ন পার্সেল ডেলিভারি সংস্থার সঙ্গে কথা বলে তাদের অনুরোধ করেছিল যাতে তার পার্সেলটা সেই দিনই ডেলিভারি করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ জায়গাতেই একই দিনে ডেলিভারি করার পরিষেবা ছিল না। আর যাদের সেই পরিষেবা ছিল, তা ছিল অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
এর থেকেই তার মাথায় ব্যবসার ভাবনা এসেছিল। সে ভেবেছিল, তার মতো অবস্থা অনেকেরই হতে পারে। অনেকেরই জরুরী পরিস্থিতিতে দ্রুত পার্সেল ডেলিভারির প্রয়োজন হতে পারে। এর থেকেই সে একটি সংস্থা তৈরির কথা ভাবে। যে সংস্থা একই দিনে কোনও শহরের মধ্যে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পার্সেল ডেলিভারি করবে। সংস্থার নাম দেয়, ‘পেপার এন পার্সেল’। সে নজর দিয়েছিল, যাতে পরিষেবাটি ব্যয়বহুল না হয়। কারণ, তাহলে সেই পরিষেবা বেশি লোক ব্যবহার করতে পারবে না। তরুণ উদ্যোগপতির অনুপ্রেরণা ছিল মুম্বইয়ের ডাব্বাওয়ালারা। অল্প পয়সায় দ্রুত খাবার ডেলিভারি করার জন্যই পরিচিত ডাব্বাওয়ালারা।
তার ব্যবসায় প্রাথমিক আর্থিক সহায়তা করেছিলেন তিলকের বাবা। এরপর, সে ডাব্বাওয়ালাদের সঙ্গে কথা বলে, সাশ্রয়ী মূল্যে শহরের মধ্যে পার্সেল সরবরাহ করার বিষয়ে। এরপর, তিলক তার ব্যবকেসা অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসে। ২০১৮ সালের মধ্যে অদম্য উৎসাহ নিয়ে তার সংস্থাকে নতুন উচ্চতায় তুলে নিয়ে গিয়েছিল তিলক। তার সংস্থার এখন বছরে আয় ১০০ কোটি টাকার বেশি! সংস্থার সরাসরি কর্মীর সংখ্যা ২০০-র বেশি। আর ডাব্বাওয়ালা কাজ করেন আরও ৩০০ জবের মতো। প্রতিদিন গড়ে ১২০০ পার্সেল ডেলিভারি করে তার সংস্থা। ২০২১-এর হিসেব বলছে, তিলকের মোট সম্পদ ৬৫ কোটি টাকার উপরে। মাসে সে আয় করে ২ কোটি টাকা!