
বিনিয়োগকারীদের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কি বাজারের অস্থিরতা? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসল চ্যালেঞ্জ হল শৃঙ্খলা মেনে বিনিয়োগ করে যাওয়া। কারণ? আসলে অনেকেই বাজারের ওঠাপড়ায় মাঝে পথ হারিয়ে ফেলেন। আর এখানেই বিশেষজ্ঞ বলছেন ‘১০-৭-১০’ সূত্রের কথা। এটি বাজারে টিকে থাকার একটি সহজ কৌশল।
আসলে, সফল বিনিয়োগের জন্য বাজারকে বোঝার চেয়েও নিজের আচরণের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা বেশি জরুরি। এই সূত্রের তিনটি ভাগ লগ্নিকারীর মানসিকতাকেই নিয়ন্ত্রণ করে।
প্রতি বছর ১০ শতাংশ পতনের জন্য প্রস্তুত থাকুন। এটা হল বাজারের ওঠাপড়া মেনে নেওয়া। ভারতে বিগত ২৩ বছরের মধ্যে অন্তত ২০ বছর বাজার ১০ শতাংশ কমেছে। অতএব, স্বল্প-মেয়াদী অস্থিরতা একটি ব্যতিক্রম নয়, বরং নিয়ম। আপনার দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ তৈরি করতে হলে এই পতনগুলিকে সয়ে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। এই সময়ে বিনিয়োগ ধরে রাখার শক্তি থাকা চাই।
দ্বিতীয় সংখ্যাটি ধৈর্য্যের কথা বলে। গত বাজারে দেখা গিয়েছে, অন্তত ৭ বছরের জন্য ধরে রাখা এসআইপির ফল সবসময়ই ইতিবাচক হয়েছে। চক্রবৃদ্ধি সুদের সুবিধা তখনই মেলে যখন আপনি আপনার অর্থকে বাড়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেন। স্বল্পমেয়াদী লগ্নির চেয়ে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগই বাজারের ধাক্কা সামলে ভাল রিটার্ন দেয়।
শেষের ১০ শতাংশ সরাসরি আপনার রিটার্নকে প্রভাবিত করবে। প্রতি বছর আপনার এসআইপির পরিমাণ ১০ শতাংশ বাড়ান। ধরুন, আপনি প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে লগ্নি করলেন ১০ বছর ধরে, যা ১২ শতাংশ হারে প্রায় ৪৬ লক্ষ টাকা হতে পারে। কিন্তু যদি আপনি প্রতি বছর ১০ শতাংশ করে এসআইপির অর্থমূল্য বাড়ান, তাহলে একই সময়ে আপনার মোট অঙ্ক প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা হয়ে যেতে পারে। আপনি আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী ৫ শতাংশ করেও বাড়াতে পারেন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই সূত্রটি কেবল রিটার্ন বাড়ানোর জন্য নয়। এটি একটি অভ্যাস তৈরির জন্য, যা আপনাকে বাজারের সব চক্রে ধরে রাখবে। অস্থিরতা মেনে নিন, দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য রাখুন এবং প্রতি বছর ধীরে ধীরে আপনার বিনিয়োগ বাড়ান—এই তিনটি পদক্ষেপই একজন সাধারণ লগ্নিকারীকে সফল করে তুলতে পারে। আপনার আর্থিক লক্ষ্য পূরণের জন্য এই শৃঙ্খলাই সেরা হাতিয়ার।