
ভারতের সুতো শিল্প আগেই টেক্কা দিয়েছে পড়শি দেশকে। নড়িয়ে দিয়েছে সেই দেশের দুতো শিল্পের ভিত। আর এবার বাংলাদেশের পাশাপাশি চিনকেও টক্কর দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে ভারত। দেশের দেশের বস্ত্র রপ্তানি শিল্পকে চাঙ্গা করতে জরুরি ভিত্তিতে একটি কম খরচের রোডম্যাপ তৈরি করছে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রক। আর এই রোডম্যাপ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম আর চিনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের একসঙ্গে মাত করবে আমাদের দেশ।
তথ্য বলছে, বস্ত্র শিল্পে ভারতের খরচ বেড়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হল, কাঁচামাল, পরিবহন বা লজিস্টিকস এবং পেট্রোলিয়াম জাত জ্বালানির খরচ। এ ছাড়াও চিন বা বাংলাদেশের মতো দেশের তুলনায় আমাদের দেশের শ্রমিকদের কর্মক্ষমতাও ২০ থেকে ৪০ শতাংশ কম। অন্যদিকে, ভিয়েতনাম শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পায় চিনের বাজারে। আবার অন্যদিকে, বাংলাদেশ ইউরোপে ডিউটি-ফ্রি রফতানির সুবিধা পায়। আর ওই সব দেশের এই ধরনের সুবিধাগুলিই ভারতকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
এই রোডম্যাপে থাকবে একটি দু’বছরের স্বল্প-মেয়াদী পরিকল্পনা, একটি পাঁচ বছরের মধ্য-মেয়াদী এবং আরও একটি দীর্ঘ-মেয়াদী কৌশল। লক্ষ্য হল, দেশের ৪০০ কোটি ডলারের বর্তমান রপ্তানিকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০০ কোটি ডলারে পৌঁছে দেওয়া। এ ছাড়াও, কমপ্ল্যায়েন্স, কর কাঠামো ও বর্জ্য হ্রাস করার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
ভারতীয় চেম্বার অফ কমার্সের (ICC) বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান সঞ্জয় জৈন মনে করেন, ‘কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার তুলে নেওয়া, শ্রম আইনকে সরল করা এবং ইউরোপের সঙ্গে দ্রুত একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই হলেই ভারতীয় বস্ত্রের রফতানি খরচ অনেকটা কমবে’। এছাড়াও, কেন্দ্র এখন নতুন ফাইবার, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল এবং ডিজিটাল ট্রেসেবিলিটি নিয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনে জোর দিচ্ছে। আগামী দিনগুলিতে এই কৌশলের ফলেই ভারতের বাজার দখলও করা ও সেই বাজার ধরে রাখার লড়াই শুরু হবে।