
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ভারতে শুরু হয় স্টিল আমদানি। ইংল্যান্ড থেকে কম খরচে সস্তা ইস্পাত হু হু করে চলে আসতে থাকে আমাদের দেশে। সঙ্গে দেশের ইংরেজ সরকারের পক্ষপাতিত্ব তো ছিলই। আর এই সবের কারণে কেঁপে যায় টাটা স্টিলের ভিত। সংস্থার তৎকালীন মাথা স্যর দোরাবজি টাটা তাঁদের কারখানাকে বাঁচাতে কার্যত সর্বস্ব পণ করেছিলেন।
কিন্তু সেই সময় টাটাদের বাঁচালেন কে? যখন খারাপ সময়, তখন TISCO-র (বর্তমানে টাটা স্টিল)। ত্রাতা হিসাবে এগিয়ে এসেছিলেন দুই বন্ধু, খানিকটা অপ্রত্যাশিত ভাবেই। জওহরলাল নেহেরু আর মহম্মদ আলি জিন্নাহ।
আসলে তাঁরাই ততকালীন বৃটিশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করলেন যাতে আমদানি শুল্ক বসানো হয়। আর তারপরই ব্রিটেন থেকে ভারতে আসা স্টিলের উপর শুল্ক বসে। আর এতেই যেন জীবন ফিরে পায় টাটার ইস্পাত।
তারপরই টাটাদের ঘুরে দাঁড়ানো শুরু। ১৯২৫ সালেই সংস্থা ৬৫ লক্ষ টাকা লাভ করে। যা দিয়ে আসলে নিজেদের ভিত শক্ত করে নেয় টাটা। তবে শুধু আর্থিক যুদ্ধ নয়। টাটায় ভিতরে ভিতরে চলছিল শ্রমিকদের কিছু সমস্যাও। ১৯২০ সালে তৈরি হয় জামশেদপুর লেবার অ্যাসোসিয়েশন। পরবর্তীতে ১৯৩৭ সালে যার নাম বদলে রাখা হয় টাটা ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন।
১৯২৮ সালে যখন সুভাষ চন্দ্র বসু (তখনও তিনি নেতাজি নন) এই ইউনিয়নের প্রসিডেন্ট, শ্রমিক স্বার্থে একাধিক স্ট্রাইক ও লকআউট হয়। তারপর সেই সুভাষ বসুর মধ্যস্থতায় ফের কাজ শুরু হয় টাটা স্টিলে। দেশের শিল্পায়নে সেই শুরু, যা আজও জারি। টাটা স্টিলের ইতিহাস মনে করিয়ে দেয়—কর্পোরেট যুদ্ধ হয়তো রাজনৈতিক চাপানউতোরেরই আর এক নাম।