
ভারতীয় সংস্থা জোহো একের পর এক বড় বড় সংস্থার ঘুম আগেই ছুটিয়ে দিয়েছে। প্রথমে মাইক্রোসফট তারপর হোয়াটসঅ্যাপ এবং তারপর গুগলের প্রতিদ্বন্দী অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে ফেলেছে তারা। এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানিয়েছিলেন, তিনি কোনও প্রেজেন্টেশনের জন্য পাওয়ার পয়েন্টের বদলে ব্যবহার করেছেন জোহো।
পরবর্তীতে জোহো মেলে অ্যাকাউন্ট খোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর এবার সেই জোহো নামতে চলেছে কনজিউমার ফিনটেকের মার্কেটে। অর্থাৎ, এবার জোহোর নতুন অ্যাপ থেকে ইউপিআই পেমেন্ট করা যাবে। জানা গিয়েছে, তাদের চ্যাটিং ও কলিং অ্যাপ আরাট্টাইয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে জোহো পে নামের একটি অ্যাপ আসতে চলেছে। আর এই সেক্টরে জোহোর পদার্পণে বেশ চাপে পড়েছে গুগল পে বা ফোন পে-র মতো সংস্থাগুলো।
জোহো জানাচ্ছে, তাদের এই নয়া জোহো পে অ্যাপের উদ্দেশ্য হল ব্যবহারকারীদের একটি নিরাপদ ও সমন্বিত লেনদেনের অভিজ্ঞতা দেওয়া। গ্রাহকরা যেন চ্যাট ইন্টারফেস না ছেড়েই টাকা পাঠাতে বা গ্রহণ করতে পারেন, সেই দিকেই নজর দিতেই আরাট্টাইয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে জোহো পে-কে। বর্তমানে অ্যাপটির বিটা ভার্সন চালু রয়েছে। খুব শীঘ্রই এটি ধাপে ধাপে দেশের সাধারণ মানুষের জন্য চালু হবে এই অ্যাপ।
জোহো পে শুধুমাত্র একটি পেমেন্ট অ্যাপ, এমনটা ভাবলে কিন্তু খুবই ভুল ভাবা হবে। কারণ, এটি আসলে জোহোর বৃহত্তর পরিকল্পনার একটি অংশ। আসলে এই অ্যাপের মাধ্যমে তারা একটি বিরাট ফাইন্যান্সিয়াল ইকোসিস্টেম তৈরি করতে চাইছে। আশা করা হচ্ছে, এই পেমেন্ট অ্যাপ বাজারে আসার পর ধীরে ধীরে ঋণ, ব্রোকিং, বিমার মতো ফাইন্যান্সের একাধিক সেক্টরে প্রবেশ করবে জোহো।
জোহো সংস্থা তাদের ব্যবসার শুরুর দিন থেকে বিটুবি পেমেন্ট ও পয়েন্ট-অফ-সেল সলিউশন দিত। আর এখন আরাট্টাইয়ের মতো একটি স্বদেশী চ্যাটিং ও কলিং প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষকেও ফিনটেকের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ব্র্যান্ড হিসেবে আরাট্টাই ইতিমধ্যেই অনেকে ব্যবহার করছেন। ইতিমধ্যেই ১ কোটির বেশি এই অ্যাপ ডাউনলোড করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই গুগল প্লে স্টোরে এই অ্যাপে ৪.৭ রেটিং দিয়েছে ১ লক্ষেরও বেশী মানুষ। আর এই প্ল্যাটফর্মে পেমেন্ট যুক্ত হলে, তা দ্রুত একটি ‘সুপার-অ্যাপে’ পরিণত হতে পারে। যা গ্রাহকদের কাছে যোগাযোগের পাশাপাশি লেনদেনেরও কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলেই আশা করছে সংস্থা।
ভারতের ইউপিআই লেনদেনের মার্কেটে প্রতিযোগিতা খুবই বেশি। কারণ, এই বাজারে ফোনপে, গুগল পে বা পেটিএমের মতো বড় সংস্থাগুলো রয়েছে। আর তাদের এই ইউজার বেসকে হারিয়ে দেওয়া জোহোর জন্য অবশ্যই একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। ভারতের এই টেক জায়ান্টের নয়া এই পদক্ষেপ ভারতের বাজারে কী প্রভাব ফেলে, সেদিকেই নজর সকলের।