মুম্বই: অধিকাংশ ট্রাকের পিছনে দেখবেন লেখা আছে ওকে টাটা (OK TATA)। নম্বর প্লেটের থেকেও বড় অক্ষরে ট্রাকের পিছনে লেখা থাকে এই শব্দগুলো। অধিকাংশ মানুষ এর অর্থ জানে না। কেউ কেউ বলেন, এটি টাটা সংস্থার তৈরি ট্রাকগুলিকে চিহ্নিত করতে এই দুটি শব্দ ব্যবহার করা হয়। না, এই উত্তর সঠিক নয়। আসলে এই লেখার সঙ্গেও যোগ রয়েছে রতন টাটার। ট্রাকের পাশাপাশি টু-হুইলার এবং চার চাকার গাড়ি তৈরি করে টাটা গোষ্ঠী। কিন্তু, টাটা গোষ্ঠীর তৈরি টু-হুইলার বা ফোর-হুইলার গাড়িতে ওকে টাটা লেখা দেখা যায় না। তাহলে কেন ট্রাকের গায়ে এমন লেখা থাকে? আসলে এর সঙ্গে যোগ রয়েছে রতন টাটার।
এটা ঠিক যে, ওকে টাটা লেখা থাকে শুধুমাত্র টাটা গোষ্ঠীর তৈরি ট্রাকগুলিতেই। তবে, টাটা গোষ্ঠীর তৈরি সব ট্রাকে এই লেখা দেখা যাবে না। যদি কোনও ট্রাকের গায়ে ওকে টাটা লেখা থাকে, তাহলে তার অর্থ হল, ট্রাকটিকে পরীক্ষা করা হয়েছে এবং এটি ভাল অবস্থায় আছে। গাড়িটি টাটা মোটরস-এর গুণগত মান অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে এবং মেরামত করা হয়েছে। টাটা গোষ্ঠীই এই শব্দদুটি লিখে দেয় ট্রাকের পিছনে। টাটা মোটরস তার নীতির জন্য এই দুটি শব্দ তৈরি করেছিল এবং ট্রাকে সেগুলি লিখেছিল। কিন্তু, ধীরে ধীরে এই দুই শব্দ তাদের ব্র্যান্ডিং-এর একটি হাতিয়ারে পরিণত হয়েছিল। ট্রাকের মাধ্যমে সারা দেশে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই দুটি শব্দ। আজ যে কাউকে ওকে টাটা কথাটি বললেই সে বলে দেবে এই শব্দটা কোথায় লেখা থাকে।
টাটা মোটরস আজ দেশের শীর্ষস্থানীয় অটোমোবাইল সংস্থা। ১৯৫৪ সালে স্বাধীনতার পরে টাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড লোকোমোটিভ কোম্পানি হিসাবে যাত্রা শুরু করেছিল এই সংস্থা। পরে এর নাম পরিবর্তন করে টাটা মোটরস করা হয়। তখন এই সংস্থা ট্রেনের ইঞ্জিন তৈরি করত। সেই সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছিল। টাটারা ভারতীয় সেনাবাহিনীকে একটি ট্যাঙ্ক তৈরি করে দিয়েছিল। সেটি, টাটানগর ট্যাঙ্ক নামে পরিচিত ছিল। এর কিছু পরে, অটোমোবাইল শিল্পে প্রবেশ করেছিল টাটা। মার্সিডিজ-বেঞ্জের সঙ্গে অংশীদারিত্বে ১৯৫৪ সালে তারা প্রথম বাণিজ্যিক যানবাহন তৈরি করা শুরু করে। ১৯৯১ সালে, টাটা মোটরস প্রথম যাত্রীবাহী যানবাহন তৈরি করা শুরু করে। তাদের তৈরি প্রথম গাড়িটি ছিল টাটা সিয়েরা। এর পরে টাটা মোটরস ভারতীয় বাজারে টাটা এস্টেট এবং টাটা সুমো চালু করে। ভারতের বাজারে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছিল টাটা সুমো। একইবাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছিল টাটা ইন্ডিকা।