সৌভাগ্য ফেরানোর দিন, নাকি পিছনে অন্য কোনও ইতিহাস! ‘ধনতেরাস’ পালিত হয় কেন?

সুমন মহাপাত্র |

Nov 13, 2020 | 5:01 AM

কেন এই ধনতেরাস পালিত হয় তা নিয়ে মূলত দুটি মত রয়েছে। প্রথম মতে 'ধন' দ্বারা মা লক্ষ্মীকে বোঝানো হলেও। দ্বিতীয় মতটা ভিন্ন।

সৌভাগ্য ফেরানোর দিন, নাকি পিছনে অন্য কোনও ইতিহাস! ধনতেরাস পালিত হয় কেন?
প্রতীকী চিত্র

Follow Us

TV 9 বাংলা ডিজিটাল: ধনতেরাস (Dhanteras) মূলত অবাঙালিদের উৎসব হিসাবে পরিচিত। আর পাঁচটা অবাঙালি উৎসবের সঙ্গে ধনতেরাসও বাঙালির অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। এখন বাঙালিরাও ধনতেরাস পালন করেন জাঁকজমকভাবে। মূলত দীপাবলির দুদিন আগে পালিত হয় ধনতেরাস। এই ধনতেরাসের আরেক নাম ধনাত্রয়োদশী। ভেঙে বললে দাঁড়ায় ধনাবত্রী ত্রয়োদশী। ‘ধন’ শব্দের অর্থ সম্পত্তি আর ত্রয়োদশী অর্থাৎ ১৩-তম দিন। হিসাব মতো কার্তিক মাসে কৃষ্ণপক্ষের ১৩-তম দিনে পালিত হয় ধনতেরাস।

ধনতেরাস মানেই বাড়িতে সোনার গয়না কেনা। কথিত আছে ধনতেরাসে ভক্তের বাড়ি যান মা লক্ষ্মী। এদিন ভক্তদের ইচ্ছা পূরণের দিন। ব্যবসায়ী মহলে এই দিন ধুমধাম করে পালিত হয়। মূল্যবান ধাতু কিনে এই দিন ধন দেবতা কুবেররেও পুজো করেন অনেকে। তবে কেন এই ধনতেরাস পালিত হয় তা নিয়ে মূলত দুটি মত রয়েছে। প্রথম মতে ‘ধন’ দ্বারা মা লক্ষ্মীকে বোঝানো হলেও। দ্বিতীয় মতটা ভিন্ন।

ছবি- সংগৃহীত

মা লক্ষ্মীর আরাধনা (Devi Laxmi Puja at Dhanteras):

এই মত অনুসারে, ধনতেরাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন রাজা হিমুর ছেলে। তাঁর উপর অভিশাপ ছিল, বিয়ের ৪ দিনের মধ্যেই সাপড়ে কামড়ে তাঁর মৃত্যু অনিবার্য। সে কথা অক্ষরে অক্ষরে জানতেন যুবরাজের স্ত্রী। স্বামীর প্রাণ রক্ষার জন্য সেদিন স্বামীকে ঘুমোতে দেননি তিনি। সারা রাত ঘরের আলো জ্বেলে স্বামীকে জাগিয়ে রাখেন রাজকন্যা। আর ঘরের বাইরে রাখা ছিল সোনা-রূপার সব গয়না ও মুদ্রা। বিধাতার বিধান অনুযায়ী, সেই ঘরে আসেন যমরাজ। কিন্তু বাইরে থাকা সোনা-রূপোর আলোয় তাঁর চোখ ঝলসে যায়। এরপরও যুবরাজের ঘরে পৌঁছলে তিনি দেখেন যুবরাজকে গল্প, গান শোনাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী। যমরাজও সেই সোনার উপর বসে গান ও গল্প শুনতে থাকেন। এই ভাবে রাত কেটে যায়। ফলে কাজ সম্পূর্ণ না করেই ফিরতে হয় যমরাজকে। সেই আনন্দে পরের দিন পালিত হয় ধনতেরাস। এদিন পুজো হয় সিদ্ধিদাতা গণেশেরও।

আরও পড়ুন: চিনের পর ‘লে’ জম্মু কাশ্মীরের অন্তর্গত! টুইটারের কাছে ব্যাখ্যা চাইল সরকার

ধন্বন্তরী ত্রয়োদশী (Puja of Dhanwantari at Dhanteras):

হিন্দু পুরাণে বলা হয়েছে, সমুদ্র মন্থনের সময় জল থেকে উঠে আসেন ধন্বন্তরী। যাঁকে ভারতীয় শাস্ত্রে আয়ুর্বেদের দেবতা হিসাবে পুজো করা হয়। কথিত আছে জল থেকে উঠে আসার সময় তাঁর এক হাতে ছিল অমৃতের কলস ও অন্য হাতে ছিল আয়ুর্বেদের বই। এই দিনটিকে ধন্বন্তরী ত্রয়োদশী হিসাবে পালন করে আসলে অয়ুর্বেদের দেবতা ধন্বন্তরীকে পুজো করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে এই দিনটিকে জাতীয় আয়ুর্বেদ দিবস হিসাবেও পালন করে আসছে আয়ুষ মন্ত্রক। ধনতেরাস নিয়ে এই মতও প্রচলিত।

ছবি- সংগৃহীত

যদিও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আজ ধন দেবীর আরাধনা করে সোনা বা মূল্যবান ধাতু কেনেন মানুষ। হিন্দুরা বিশ্বাস করেন নতুন কোনও ধাতু আজকের দিনে কিনলে তা হয়ে ওঠে সৌভাগ্যের প্রতীক।

Next Article